নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বৈশিক করোনা মহামারিতে যখন মানুষের জীবন জীবিকা সীমাহীন ভোগান্তিতে তখনই মৃত দরিদ্র প্রিয় শিক্ষকের পরিবারকে নগদ ৭ লাখ টাকার অর্থিক সহায়তা দিয়ে মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো তারঁই হাতে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, বরুড়া উপজেলার ১নং ভবানীপুর ইউনিয়ন রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা ও বুড়িচং উপজেলার কালাকচুয়া ফাজিল( ডিগ্রী) মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম (৪৫) গত বছর ১৩ মে করোনা উপসর্গসহ নানা রকম শারীরিক জটিলতা নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক মাওলানা জাহাঙ্গীর আলমের পরিবার ছিলো আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। ২০ বছর শিক্ষকতা জীবনে তিনি ছিলেন শিক্ষার্থীদের কাছে প্রিয়মুখ। তারঁই হাতে তৈরী হয়েছে খ্যাতনামা আলেম, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও আইনজীবীসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ।
তারঁ মৃত্যুর পর একমাত্র আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ৮ সদস্যের পরিবার নিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন পিতা মাওলানা মোসলেম মিয়া(৭০)। গতকাল শিক্ষার্থীদের সংগ্রহ করা নগদ অর্থ পেয়ে সন্তানদের নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছেন তাঁর একমাত্র স্ত্রী । মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মাওলানা হেলাল উদ্দিন হায়দার বলেন, সাবেক ও বর্তমান ছাত্রছাত্রীরা মিলে এই দুঃসময়ে শিক্ষকের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে যে মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো তা সত্যিই প্রশংসার দাবীদার। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। অনুভূতি প্রকাশ করে তাঁর প্রাক্তন ছাত্র এ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম বলেন, মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম আমাদের প্রিয় শিক্ষক ছিলেন। দেশ-বিদেশে এখনও তারঁ হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী রয়েছে যারা সুনামের সাথে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত রয়েছেন।
প্রাক্তন ছাত্র ডাঃ মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রিয় শিক্ষকের পরিবারের এই দুঃসময়ে তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমাদের এই সহযোগিতা আগামীদিনগুলোতেও অব্যাহত থাকবে। তারঁ অপর ছাত্র কামরুল ইসলাম বলেন,আজ প্রিয় শিক্ষকের এতিম সন্তানদের জন্য সামান্য অবদান রাখতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। আশা করি আমাদের এ মহৎ কর্ম থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সমাজের সকল ব্যক্তিবর্গ তাদের জীবিত কিংবা মৃত অসহায় শিক্ষকদের জন্য ভুমিকা রাখবে।