প্রচ্ছদ / প্রচ্ছদ / আমরা প্রত্যেকে ভালো মানুষ হলে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়া সম্ভব: ড. চৌধুরী মাহমুদ

আমরা প্রত্যেকে ভালো মানুষ হলে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়া সম্ভব: ড. চৌধুরী মাহমুদ

সিএন নিউজ ডেস্ক:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী অনুষদের সাবেক ডীন প্রফেসর ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান বলেন, পৃথিবীতে ততোদিন সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, শান্তি সম্ভব নয় যতোদিন নৈতিকতা না আসবে। আর ততোদিন নৈতিকতা প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় যতোদিন ভালো মানুষ নেতৃত্বে না আসবে। আমরা প্রত্যেকে ভালো মানুষ হলে একটি অসাম্প্রদায়িক সুন্দর দেশ গড়া সম্ভব হবে। আজ বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশন মিলনায়তনে দ্যা স্কলারস ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত কৃতি ছাত্র-ছাত্রী সংবর্ধনা ও বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, তোমরা অনেক প্রতিযোগিদের মধ্য থেকে এখানে এসেছ। এই সফলতা তোমাদের এখানেই যেন থেমে না যায়। পৃথিবীতে যারা বড় হয়েছে তারা একসময় তোমাদের মতই শিশু ছিল। আজকে পৃথিবীতে মানুষ খেতে পায় না। বাংলাদেশেও ৪০ শতাংশ মানুষ ভালোভাবে খেতে পায় না। তাদের কথা ভাবতে হবে। তাদের কথা যে ভাববে সেই প্রকৃত মানুষ। ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান আরো বলেন, কিছু জিনিস দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, সমাজকে নষ্ট করে দিচ্ছে,বাধাগ্রস্ত করছে পারিবারিক মূল্যবোধকে, পরিবার ভেঙে যাচ্ছে, নৈতিকতা হারিয়ে যাচ্ছে।পাশ্চাত্য সংস্কৃতি ধারণ করলেই অাধুনিক হওয়া যায় না বরং নিজেদের শিক্ষাকে ও আদর্শকে লালন করেও আধুনিক হওয়া যায়। দিনে দিনে পারিবারিক বন্ধন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মা দিবস পালন হচ্ছে, বাবা দিবস পালন হচ্ছে কারণ মা-বাবা, সন্তান এসব বন্ধন থেকে সরে আসছি আমরা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী বরকত আলী বলেন, নিথর, নিস্তব্ধ ও চিন্তাহীন ভবিষ্যৎ এ তিনটি শব্দ আমাকে হতাশ করে দিচ্ছে। কাকে ধরব, কাকে মারব এ চিন্তায় সমস্ত বিশ্ব মশগুল। সমাজ একটি সম্মিলিত কর্মের ফসল। সবাই মিলে কাজ করতে হবে। শিক্ষার মাধ্যমে সার্বিক কল্যাণ হয়। তিনি বলেন, যে সরকার ক্ষমতায় আসে তারাই শিক্ষানীতি পরিবর্তন করে যা যুগোপযোগী নয় বরং স্থিতিশীলতা নষ্ট হচ্ছে যা নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করছে। আমাদের রাষ্ট্র বলে আমরা এখনো শিশু। অথচ স্বাধীনতার পর থেকে শিশুর বয়স ৪৮ হয়ে গেছে। কোনো উন্নত দেশই তাদের অবস্থার উন্নতি করতে ৪৮ বছর লাগায়নি। কাজী বরকত আলী আরো বলেন, দ্যা স্কলার্স ফোরাম যে কাজ করছে শিক্ষার সার্বিক উন্নয়নে, আমি তাদের সাধুবাদ জানাই। আজকে কিশোর গ্যাং তৈরি হচ্ছে। ছোট বয়সেই মানুষের ক্ষতি করা শিখে যাচ্ছে। এসব বাবা-মায়েদেরই দেখতে হবে। বাবা মায়ের দায়িত্ব সন্তানকে এসব থেকে ফিরিয়ে রাখা। বাবা মাকেই খেয়াল রাখতে হবে সন্তান কোথায় যায়, কার সাথে মিশে। বুয়েটে শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।ঢাবিতে ডাকসুতে এক ছাত্রকে পেটাচ্ছে আরেক ছাত্রই। বাবা মায়েদের এটা বুঝতে হবে। নৈতিক শিক্ষা আমরা দিতে পারি নাই। বাবা মায়েদের উচিত শিশুদের সব সময় পজেটিভ মোটিভেশন করা। সব বিষয়ে শুধু ‘না’ উচ্চারণ না করে কী করলে কী হবে, কী সমস্যা হবে সেটাই বুঝিয়ে বলা। তিনি আরো বলেন, প্রতিটি মানুষের ক্ষমতা থাকে লুকায়িত, অপেক্ষ্য। সঠিক পরিচর্যা করলে একে সম্পদে পরিণত করা সম্ভব। অভিভাবকরা সন্তানকে নৈতিকতা শিক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সন্তানদের দক্ষ করে তুলতে হবে। আচার ব্যবহার শিক্ষা দিতে হবে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো মেধা। মেধাকে কাজে লাগাতে হবেশিক্ষার্থীদের প্রতি বলেন, বাবা মায়েদের কষ্ট দেয়া যাবে না, দেশকে ভুলে যাওয়া যাবে না, কখনো ধর্ম বা সৃষ্টিকর্তাকে ভুলে যাওয়া যাবে না। যে মানুষ নিয়মিত মসজিদ, মন্দির, গির্জায় যায় সে কখনো মিথ্যা বলতে পারে না। অন্যের ক্ষতি করতে পারে না।

দ্যা স্কলারস ফোরামের ভাইস- চেয়ারম্যান ও বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানের সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক মোহাম্মদ আবুল বাশার বলেন, দেশে এমন এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, দুষ্টের লালন হচ্ছে সৃ শিষ্টের অবহেলা হচ্ছে। দেশে শিক্ষা ও মেধার কদর নেই। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে আমেরিকা গিয়ে শুনেছি, আগে নাসায় ভারতীয়রা বেশি কাজ করত। এখন সেখানে বাংলাদেশেরও অনেকে ভালো অবস্থানে কাজ করছে।” এটা একটা ভালো দিক। কিন্তু দেশে কদর না পেয়েই তো তারা বিদেশে চলে যাচ্ছে। মেধাগুলো বিদেশে চলে যাচ্ছে এটা খারাপ খবর। তিনি আরো বলেন, যখন কোনো ঘটনা ঘটে তখনই আমরা জানতে পারি। তাই আমাদের সন্তানরা কোথায় যাচ্ছে, কার সাথে চলছে, কী করছে এসব খবর রাখতে হবে। পৃথিবীর সব দেশের মধ্যে আমাদের দেশ সুন্দর। দেশকে ভালোবাসতে হবে। দ্যা স্কলারস ফোরামের পরিচালক, বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তা তার বক্তব্যের শুরু বৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদেরকে প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন করে মেধার স্বাক্ষর রাখায় অভিনন্দন জানান এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে রেজাল্ট দিয়ে বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন দ্যা স্কলারস ফোরামের সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান, কোষাধক্ষ্য আবুল খায়ের, অফিস সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, সাবেক পরিচালকবৃন্দ শেখ এনামুল কবির, রেজাউল হক রিয়াজ তোফাজ্জেল হোসেন, খিলগাঁও সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ হাওলাদার সহ ফোরামের সদস্যগণ প্রমূখ। উল্লেখ্য, রাজধানীর দুটি কেন্দ্রে শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক হাজার পাঁচশত ছত্রিশ জন শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। যাদের মধ্যে ১৫১ জন শিক্ষার্থীদের আজ বৃত্তির অর্থ, ক্রেস্ট,সনদ ও ইংরেজী নববর্ষের উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।

 

এছাড়াও চেক করুন

প্রথম ব্যক্তি হিসেবে বঙ্গবন্ধু টানেলে টোল দিলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে টোল দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *