প্রচ্ছদ / কুমিল্লা ও নাঙ্গলকোট / বুক রিভিউ বই: ডাকপিয়ন লেখক: আব্দুল্লাহ আল মামুন

বুক রিভিউ বই: ডাকপিয়ন লেখক: আব্দুল্লাহ আল মামুন

বুক রিভিউ
বই: ডাকপিয়ন
লেখক: আব্দুল্লাহ আল মামুন

* ” হারিকেনের আবছা আলোয় তিন মূর্তিমান চেহারা দেখতে পায় দুই বোন নয়না এবং সতী। একজনের মুখে জ্বলন্ত সিগারেট অন্য দুইজন মুখ টিপে হাসছে আর তাদের দিকে এগিয়ে আসছে। সতী বড় বোন নয়নার হাত চেপে ধরে। ভয়ে চোখ জোড়া বড় করে লোকগুলোকে দেখছে তারা। এরা পরিচিত গ্রামের মানী লোক। দুই বোন কিছু বুঝার আগেই দুজন পুরুষ এসে তাদের মুখ চেপে ধরে এবং তাদের উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। ধর্ষণ করে তাদের।
মজিদ মিয়ার মধ্যে হঠাৎ পরিবর্তন আসে। ইদানিং মাথা গরম হলেই তিনি নিজের একটি রাম-দা আছে, ওটায় ধার তোলে আর বিড়বিড় করে কিছু বলে। একদিন দবির গাছি সেটা দেখে ফেলে। আশ্চর্য হয় দবির গাছি। মজিদ চুরি ছেড়ে হঠাৎ রাম-দা শান দিচ্ছে কেন? মনে মনে কি মতলব আঁটছে সে!
ডাকপিয়ন আনাসের মন ভেঙ্গে যায়। তার প্রিয়তমা নীরুর কোলন ক্যান্সার ধরা পড়েছে। আবার তার সম্পর্কে একটা বাজে সংবাদও চার দিকে রটছে। তাকে নিয়ে কত স্বপ্ন মনের অলিন্দে গাঁথা কিন্তু এক অচেনা ঝড় সব কেমন তছনছ করে দিচ্ছে। তাকে লেখা চিঠিটা এখনো বুক পকেটে সযত্নে রাখা। দেওয়া হয়নি। হয়ত আর কখনো দেওয়া হবে না। অথচ রোজ কত লোকের চিঠি সে বিলি করে বেড়ায়।
সুনীল বাবুর মনের জ্বালা এখনো মিটেনি। প্রতিশোধের আগুন ক্রমাগত জ্বলছে মনের মধ্যে। ফাঁসির দড়িতে ঝুলন্ত মেয়েদের ছবি এখনো তার চোখে ভাসে। তাকে কাঁদায় বার বার। তার সম্পদ পাওয়ার লোভে মরিয়া হয়ে উঠছে জসিম মেম্বার, ইমাম সাফায়েত আলী আর কলিমউদ্দীন চেয়ারম্যান। লোভের আগুনে পুড়ে মরেছে ইমাম সাফায়েত আলী। বিলের জলে বস্তা বন্দি অবস্হায় পাওয়া যায় তাকে।”

এমনি সামাজিক থ্রিলার জাতীয় রোমহর্ষক বর্ণনায় রচিত “ডাকপিয়ন” বইটি। যা পাঠক মনে নানা প্রশ্ন জাগাবে এবং আনন্দও দেবে। তরুণ লেখক আব্দুল্লাহ আল মামুন অত্যন্ত সুনিপুন ভাবে নিজের মনের মাধুরী মিশিয়ে কাহিনীর বিস্তার করেছেন। জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত, চাওয়া-পাওয়া, সামাজিক দ্বন্দ্ব যা আমাদের পরিচিত জীবনের একটি বাস্তব রূপ এখানে দেখতে পাওয়া যায়। শব্দ চয়ন ও শৈল্পিকতা ফুটিয়ে তুলতে লেখকের অকৃপণ চেষ্টা ছিল।
তবে চরিত্র চিত্রায়ণ ও নাম নির্বাচন আমাদের পরিচিত হলেও কাহিনীর গতিময়তা এবং শব্দের অতিরঞ্জনে সামান্য ত্রুটি লক্ষ্য করা যায়। কাহিনীর মধ্যে সামান্য সময় ডুবে থাকলে মনে হবে যেন অস্হির কোন সমাজে বিচরণ করছি। যেখানে সবসময় খেয়ো-খেয়ি আর চুরি বাটপারিতেই মেতে আছে সবাই।
পরিশেষে, সকল বিচ্যুতি বাদ দিলে” ডাকপিয়ন” কে একটি অসামান্য শিল্প কর্ম বলা যায়। লেখক মাতৃ ভাষার উন্নয়নে আন্তরিক ছিলেন। ইতিপূর্বেও লেখকের আরো একটি যৌথ গল্পের বই বেরিয়েছে। বই গুলো পড়ার অনুরোধ রইলো।
আমি তার সার্বিক মঙ্গল কামনা করি।

মো: মনির আহমদ (শিক্ষক)

এছাড়াও চেক করুন

নতুন ঘর পেয়ে মহা খুশি নারুয়ার অসহায় মুনাব মিয়া

‘প্রত্যয়’ সংগঠনের উদ্যোগে ও সজআ সংগঠন ও শ্রীকামতা পশ্চিমপাড়া স্পোটিং ক্লাবের সহযোগীতায় অবশেষে শেষ হলো …