প্রচ্ছদ / জাতীয় / খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিতে আইনজীবীদের হট্টগোল

খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিতে আইনজীবীদের হট্টগোল

সিএন নিউজ অনলাইন ডেস্ক:

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সবশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থা জানিয়ে মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন আপিল বিভাগে দাখিল করা হয়নি। এটিসহ দুটি প্রতিবেদন কোনো ধরনের ব্যর্থতা ছাড়াই ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ১২ ডিসেম্বর বিষয়টি আদালতের কার্যতালিকায় আসবে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়া জামিন চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেছিলেন। এই আবেদনের শুনানিতে গত ২৮ নভেম্বর আদালত খালেদা জিয়ার সবশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থা সম্পর্কে জানাতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে বোর্ডের মেডিকেল প্রতিবেদন ৫ ডিসেম্বরের (আজ) মধ্যে আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর আগে গঠিত আরেকটি মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদনও দাখিল করতে বলেছিলেন আদালত।

আজ ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য উঠলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল। কিছু পরীক্ষা শেষে প্রতিবেদন দিতে হবে বলে তাঁকে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ জন্য সময় দরকার।

তখন খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, আগের একটি রিপোর্ট আছে। শুনানি হতে পারে।

 

 

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ওই রিপোর্ট আমাদের দেওয়া হয়নি। পরে রিপোর্টটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে দেখানো হয়। তখন তিনি বলেন, এটা গোপনীয়। এটা কীভাবে বাইরে আসে। জয়নুল আবেদীন বলেন, বোর্ড হয়েছে। খালেদা জিয়ার অবস্থা খারাপ। চিকিৎসার জন্য তাঁকে বাইরে নেওয়া দরকার। অ্যাটর্নি জেনারেল ওই বোর্ডের কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, অথরিটি হচ্ছে বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য। তিনি বলেছেন, টেস্ট শেষে রিপোর্ট দিতে পারবেন। সময় লাগবে।তখন জয়নুল আবেদীন বলেন, বোর্ড তো আমরা করিনি। এ অবস্থায় জয়নুল আবেদীন গত ২৮ নভেম্বরের আপিল বিভাগের আদেশ পড়ে শোনান। ওই আদেশে গত ৭ অক্টোবরে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন দাখিলের কথাও রয়েছে। জয়নুল আবেদীন বলেন, মানবিক আবেদন, জীবন রক্ষার জন্য জামিন দেন। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ইমোশনাল কথা বলবেন না। এই কথায় আপত্তি জানান জয়নুল আবেদীন।

 

খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ করে বলেন, এত দুঃসাহস পেলেন কোথায়? সর্বোচ্চ আদালত আদেশ দিয়েছেন।

খোকনের এই বক্তব্যে আপত্তি জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।

প্রধান বিচারপতি বলেন, রিপোর্ট আসুক। বিষয়টি আগামী বৃহস্পতিবার থাকবে।

জয়নুল আবেদীন বলেন, দীর্ঘ সময়। ইনজাস্টিস হবে। সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি আস্থা আছে, সে জন্য বলছি।

প্রধান বিচারপতি বলেন, এ জন্য আমরা রিপোর্ট কল করেছি।

জয়নুল আবেদীন বলেন, রিপোর্ট আসা ২৪ ঘণ্টার বিষয়। খালেদা জিয়ার অবস্থা খুবই খারাপ।

এ অবস্থায় আদালত বলেন, বিষয়টি বৃহস্পতিবার থাকবে। একসঙ্গে দুটি রিপোর্ট দেখা হবে।

জয়নুল আবেদীন বলেন, খালেদা জিয়া অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় আছেন। আদালত চাইলে তাঁকে হাজির করে দেখতে পারেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, সব হবে। আগে রিপোর্ট আসুক।

জয়নুল আবেদীন বলেন, সোমবার করুন।

তখন খোকন বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেলের অ্যাডভাইসে রিপোর্ট আসেনি।

 

এ সময় উপস্থিত আইনজীবীদের মধ্যে হইচই শুরু হয়।

একপর্যায়ে আদালত বলেন, চিৎকার করলে শুনব কী করে।

বিএনপির আইনজীবীরা চিৎকার করে বলতে থাকেন, জামিন চাই, জামিন চাই।

এ অবস্থায় আদালত আদেশ দেন।

আদালতের আদেশ দেওয়ার পরও হইচই চলে। পরে এজলাস ত্যাগ করেন বিচারপতিরা।

বিচারপতিরা চলে যাওয়ার পরও বিএনপি-সমর্থক আইনজীবীরা আদালতকক্ষে বসে থাকেন।

বিরতির পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিচারপতিরা এজলাসে আসেন। অন্য মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। তখনো বিএনপি-সমর্থক আইনজীবীরা আদালতকক্ষে বসেছিলেন। তাঁরা হইচই করেন। উই ওয়ান্ট জাস্টিস বলে স্লোগান দেন।

গত বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ে খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। এই সাজা বাতিল চেয়ে গত বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। শুনানি নিয়ে গত ৩০ এপ্রিল হাইকোর্ট ওই আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে বিচারিক আদালতে দেওয়া জরিমানার আদেশ স্থগিত করে বিচারিক আদালতে থাকা মামলাটির নথি তলব করেন হাইকোর্ট। গত ২০ জুন মামলার নথি হাইকোর্টে আসার পর খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন আদালতে তুলে ধরেন তাঁর আইনজীবীরা। গত ৩১ জুলাই জামিন আবেদন খারিজ করেন হাইকোর্ট। পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আপিল বিভাগে যান।

 

এছাড়াও চেক করুন

রাজনৈতিক মামলায় পলাতক সৈয়দ মো: ওবায়েদ উল্যাহ

ফেনী সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের দক্ষিন খাসেবাড়ী মোস্তাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ মো: ওবায়েদ উল্যাহ পিতার- …