এমডি সাইফুল্লাহ, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
১৯৭১ সালের এই দিনে শত্রু মুক্ত হয় ঠাকুরগাঁও। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করলেও ঠাকুরগাঁও মুক্ত হয় আগে, ৩ ডিসেম্বর। এই এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ শুরু হয় সেপ্টেম্বর মাস থেকে। একাত্তর সালের ৭ সেপ্টেম্বর পঞ্চগড়ের জগদলহাট আক্রমণের মধ্যে দিয়ে এই এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্রাভিযান শুরু হয়। একাত্তরের ২৩ নভেম্বর ঈদুল ফিতরের রাতেই সম্মিলিত বাহিনী অমরখানা ও জগদল দখল করে নেয়। পঞ্চগড়ে পাকিস্তানি বাহিনীর মজবুত ঘাঁটি ছিল। এখানে তাদের তিন ব্যাটালিয়ন সৈন্য অবস্থান করতো। মূল সড়কের উভয় পাশেই ছিল পাকা বাংকার ও মজবুত ট্রেঞ্চ (পরিখা)। ২৬ নভেম্বর মুক্তিবাহিনীর এক ব্যাটালিয়ন ও ভারতীয় রাইফেলস রেজিমেন্টের এক ব্যাটালিয়ন সৈন্য যৌথভাবে পঞ্চগড় আক্রমণ করে। এখানে ভারতীয় বাহিনীর প্রায় ১০০ জন ও মুক্তিযোদ্ধাদের ২২ জন হতাহত হয়।
২৭ নভেম্বর সারাদিন ব্যাপী উভয় পক্ষ তাদের নিজ অবস্থান থেকে তুমুল গোলাগুলি বর্ষণ করে। এদিন বিকেল থেকেই শুরু হয় ভারতীয় বিমান বাহিনীর আক্রমণ। পাকিস্তানি সেনারা পর্যুদস্ত হয়ে পঞ্চগড় থেকে পিছু হটে ময়দানদিঘিতে ডিফেন্স নেয়। এ রাতে সম্মিলিত বাহিনীর প্রায় ২৫ জন এবং পাকিস্তানি সেনাদের ২৫০ জনের মত হতাহত হয়। ২৯ নভেম্বর মুক্ত হয় পঞ্চগড়। সম্মিলিত মিত্র বাহিনী ৩০ তারিখে বোদা এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের পরবর্তী ডিফেন্সের উপর হামালা চালায়। ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখে বোদা থানা শত্রুমুক্ত হয় এবং সম্মিলিত মিত্র বাহিনী এগিয়ে যেতে থাকে। ভুল্লী ব্রিজ মাইন দিয়ে উড়িয়ে পাকিস্তানি বাহিনী পিছনে হটতে বাধ্য হয়। ভারতীয় সৈন্য এই ব্রিজ মেরামত করে ফেলে রাতারাতি। ডিসেম্বর মাসের ২ তারিখ ভোরে পাকিস্তানি বাহিনী ঠাকুরগাঁও শহরের শক্ত ডিফেন্স ও তাদের রিয়ার হেড কোয়ার্টার ইপিআর ক্যাম্পের ঘাঁটি ছেড়ে বীরগঞ্জের দিকে পিছু হটতে থাকে এবং ভাতগাঁও পুলের কাছে তাদের ডিফেন্স নেয়। তার আগে ২ ডিসেম্বর ভোরে পাকিস্তানি বাহিনী ইপিআর ক্যাম্পের সামনের রামদাড়া পুলের ব্রিজ উড়িয়ে দেয়। সকালে সম্মিলিত বাহিনী ব্রিজের পাশ দিয়ে রাস্তা করে সমরাস্ত্র নিয়ে পার হয়। গেরিলারা ২ ডিসেম্বর রাতেই ঠাকুরগাঁও শহরে প্রবেশ করে। তারা গড়েয়া রাস্তা দিয়েও অগ্রসর হয়।
পরদিন ৩ ডিসেম্বর সকালে সম্মিলিত বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরাট একটি দল ঠাকুরগাঁও শহরে প্রবেশ করে । ঠাকুরগাঁও মুক্ত দিবসে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আলোক প্রজ্জ্বালন, সমাবেশ, শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, আবৃত্তি, গণসঙ্গীত, ফানুস ওড়ানো এবং মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারদের সম্মাননা প্রদান, আতশবাজি পোড়ানো ইত্যাদি।
CNNEWS24.COM সত্যের সন্ধানে সবার সাথে মিলে মিশে
৮ মন্তব্য
Pingback: clothing manufacturer
Pingback: PG WALLET สล็อตเว็บตรง
Pingback: Aviator Game
Pingback: เว็บหวย ยินดี ลุ้นรวยได้ทุกวัน
Pingback: Go X Curiosity Lab
Pingback: https://maxxsecret.kz
Pingback: full body silicone baby dolls
Pingback: ข่าวสารฟุตบอล