কুরবানির ঈদ মুসলিম সমাজের ত্যাগের উৎসব। ভোগে নয়, ত্যাগেই শান্তি এ কথার যথার্থতা পাওয়া যায় মুসলিম সমাজে। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মুসলিম সমাজের ত্যাগের পরাকাষ্ঠা পরিলক্ষিত হয় কুরবানি ঈদে। ভোগের উৎসব সবাই করে থাকে কিন্তু ত্যাগের উৎসব শুধু সাধুজনই করেন। নিজের উপার্জিত অর্থ ত্যাগ করে আনন্দ উৎসব করার দৃষ্টান্ত বিরল। ত্যাগের উৎসব শুধু মুসলিম সমাজেই বিদ্যমান। সাধ্য অনুযায়ী প্রত্যেক মুসলিমের কুরবানির বিধান ইসলামে আছে।
প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর শারীরিক কুরবানির জন্য নামাজ, রোজা ও অন্যান্য ইবাদাত অপরিহার্য। আর বিত্তশালী মুসলিমের জন্য অন্যান্য ইবাদতের সাথে কুরবানিও অপরিহার্য। এ কুরবানি করা হয় পশু জবেহের মাধ্যমে। মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর স্মৃতি ধারণ করার জন্য আল্লাহ তায়ালা উম্মাতে মুহাম্মাদীর উপর পশু কুরবানি অপরিহার্য করেছেন। তাই মুসলিমরা প্রতি বছর এ কুরবানি করে থাকেন। তারা এ ত্যাগের জন্য ব্যথিত নন বরং আনন্দ উৎসব করেন। আর ত্যাগের এ উৎসবের নাম কুরবানি ঈদ।
মুসলিম সমাজের পশু কুরবানির ঐতিহ্য অনেক পুরনো। জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আ.) পশু কুরবানির প্রতিষ্ঠাতা। উম্মাতে মুহাম্মাদীরা ইব্রাহিম (আ.)-এর উত্তরসূরি হিসেবে পশু কুরবানি করে থাকেন। পশু কুরবানির এক লোমহর্ষক ইতিহাস আছে। আল-কুরআনের সূরা সফ্ফাতে বিবৃত হয়েছে।
কুরবানীর পশু উৎসর্গ করা হবে কেবল এক আল্লাহর উদ্দেশ্যে, অন্য করো জন্য নয়,
কেননা কুরবানী হচ্ছে ইবাদত।
আল্লাহ তা’লা বলেন:
‘বলুন!
আমার সালাত,আমার কুরবানী, আমার জীবন ও
আমার মরণ জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহরই উদ্দেশ্যে, তাঁর কোন শরীক নেই,
আর আমি এর জন্যই আদিষ্ট হয়েছি এবং
আমিই প্রথম মুসলিম।
[সূরা আল-আনআম : ১৬২-১৬৩]
কুরবানির মূল উদ্দেশ্য সর্বাধিক প্রিয়বস্তু ত্যাগের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। মনের মধ্যে লুকায়িত হিংসা-বিদ্বেষ এবং সকল প্রকার অসৎ-পাপ চিন্তা নির্মূল করার মাধ্যমে কুরবানির উদ্দেশ্য হাসিল করা যায়। এ উদ্দেশ্য সাধনে পশু কুরবানি উপলক্ষ মাত্র। প্রকৃতপক্ষে পশু কুরবানির মধ্যে লুকিয়ে আছে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও আনুগত্য।
ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ন বিষয় এ কুরবানীকে প্রদর্শনেচ্ছার জায়গায় নিয়ে আমরা কি অসুস্থ মানসিকতার পরিচয় দিচ্ছি না..?
কে কত বড় গরু কিনলাম, কার গরুর দাম কত বেশি?
এ অসুস্থ মানসিকতার পরিচয় দিচ্ছি প্রতিনিয়ত।আল্লাহ মানুষের বাহ্যিক দিক দেখেন না, আল্লাহ দেখেন মানুষের অন্তর।
ফেইসবুকে গরুর ছবি দিয়ে আমরা আসলে কি প্রমাণ করার চেষ্টা করছি..?
সেলপিকে নিতে নিতে যখন কাউপি পর্যন্ত পৌঁছে দিলাম তখন মনে হয় কুরবানির পশুটিও আমাদের বোকামি দেখে নিবৃতে অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছে।
শুধু এটুকু বলতে চাই আমরা যে যেখানে আছি সবার জায়গা থেকে সচেতন হলে কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে ভূমিকা রাখলে হয়তো কাউপি থেকে নিস্তার সম্ভব।
আসুন ধর্মীয় অনুশাসন মেনে সুস্থ ও সুন্দর চিন্তার পরিচয় দেই।
আফজাল হোসাইন মিয়াজী
(শিক্ষক,লেখক ও সাংবাদিক)
CNNEWS24.COM সত্যের সন্ধানে সবার সাথে মিলে মিশে
৫ মন্তব্য
Pingback: หนองใน
Pingback: joka casino online
Pingback: แอพเช็คสลิปโอนเงิน
Pingback: medieval
Pingback: เครื่องเป่าแอลกอฮอล์