প্রচ্ছদ / ক্যাম্পাস / দুই ছাত্রলীগ নেতার অডিও ফাঁস, কামানো হয়েছে ১০ কোটি টাকা

দুই ছাত্রলীগ নেতার অডিও ফাঁস, কামানো হয়েছে ১০ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাবেক উপ পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জুবায়ের আহমেদের কথোপকথনের অডিও গত মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হয়েছে।

দুইটি অডিও ক্লিপে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এতে পুরো ক্যাম্পাস জুরে চলছে আলোচনা সমালোচনা।

অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির সাথে শাখা ছাত্রলীগ সম্পাদক রাকিব আদালতে রীট করে রায় টাকার বিনিময়ে কিনে আনার কথা বলেন।

আর সাবেক উপ পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জুবায়ের সাবেক শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিম ১০ কোটি টাকা কামিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া বর্তমান শাখা ছাত্রলীগের বিদ্রোহীদলের কর্মীদের মাদকের টাকা দিয়ে পুষে রাখা হচ্ছে বলেও অডিওতে বলা হয়।

সম্পাদক রাকিবের ২ মিনিট ১৮ সেকেন্ডের অডিওটিতে আদালত নিয়ে বিভিন্ন আপত্তিকর কথা উঠে এসেছে। কথোপকথনে রাকিব হাইকোর্টে একটি রিট সম্পর্কে বলেন, হাইকোর্টে একটা রিট করতে হবে। রিট করে রায় কিনে আনতে হবে। হাইকোর্টের এমন এমন জায়গায় এমন এমন লাইন, আপনি যেভাবে চাবেন সেভাবে রায় দিবে। শুধু টাকা লাগবে।

দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে অবমাননার প্রতিবাদ জানিয়ে রাকিবের শাস্তির দাবিতে ছাত্রলীগের বিদ্রোহী গ্রুপের নেতাকর্মীরা মঙ্গলবার রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এবং বুধবারে মানববন্ধন করেছে আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

অন্যদিকে রাকিব এ জুবায়ের এর মাঝে ৪মিনিট ৯ সেকেন্ডের অডিওতে জানা যায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা কে কত টাকা কামিয়েছেন। বর্তমান বিদ্রোহী কর্মীদের কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, টাকার উৎস কোথায়?

জুবায়ের বিদ্রোহী নেতাদের কথা না শুনলে খুন হয়ে যেতে পারেন বলে এতে বলেছেন তিনি।

অডিওটি তুলে ধরা হলো :

আরাফাতের কোন ছেলে পেলের গাঁয়ে হাত দেবো না। আরাফাতের যে কটা কাজের ছেলে পেলে আছে, যারা গাঁজা খায় তাদের গাঁজা খাওয়ার টাকা দিতে হবে। যারা একটু মাল খায়, তাদের মাল খাওয়ার টাকা দিতে হবে। যারা হলের সুবিধা চায় তাদের হলে সুবিধা দিতে হবে। কিন্তু সেই কাজটা

রাকিব-তাইলে আমি এখন কী করব? আমি এখন রাজু ভাইয়ের কাছে যাব?
জুবায়ের-‎রাজু ভাই তোরে মেনে নিবে না।
রাকিব-‎কেন?
জুবায়ের-‎এই হলো মূল কথা। তোর একটাই কাজ পদত্যাগ করা।
রাকিব-‎রাজু ভাই কী চায়?
জুবায়ের-‎আমি ঐডা জানি না। কমিটি ভাইঙা দিতে কইছে। হালিম, শাহীনের কাছ থেকে টাকা খেয়েছে না রাজু। এই ক্যাম্পাস থেকে আট, দশ কোটি কামিয়েছে হালিম। ঐখান থেকে দুই কোটি খাইছে না রাজু। তুমি বুঝো না রাজনীতি? তুমি যদি আমারে দুই কোটি টাকা দাও, তুমি আমারে মাইরা মাডার কল্লেও আমি তোমার কথা শোনব। আমি শিবির মারতাম। মেলা আগেত্তে আইজকের না সাইফুলের থে। মনে কর তোরে চাকরি দিলাম। বিশ লাখ পেলাম, চলে গেল পাঁচ লাখ। মনে করো গিভ এন্ড টেক কোন প্রমাণ নাই। দিছিস বিশ লাখ তুই আমারে? কোন প্রমাণ নাই রেকর্ডিং ও নাই বাল ছিড়তে পারবি তুই আমার? করার কিছু আছে? তুই পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে চইলা যা। তোরে ভালো কিছু পদ দেবনে। আমার ভালো লাগে না ওগুলো। তোরে নিয়ে ভাবতে আর ওগো নিয়ে ভাবতে আর ভালো লাগে না। আমি যে তোর রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করে দিলাম, তুই আমার কথা কখনো শোনিসনি, গুরুত্ব দেসনি। তোর রুমেত্তে সরাই দিছিস আমার খারাপ লাগছে।
তুই তুহিনের কথা শোনলি।.. আমারে তো কোনদিন আরাফাতেরা ভালোবাসেনি। আজগে ভালোবাসে আমি রাজনীতি করি তাই। আমারে ইউজ করে। এখনো ইউজ করতেছে অস্বীকার করার কিছু নেই।
রাকিব- আমি কী তোর সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করছি?
জুবায়ের- ‎খারাপ ব্যবহার করিসনি। তোরে খারাপ বানানো হয়েছে মেইনলি। আব্দুস সোবহান গোলাপ ফোন দেয় হানিফ ভাইরে। কার জন্য ফোন দেয়? আমি মাডার হয়ে যাই… কালুর ছেলে পেলের হাতে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আমার জন্য ফোন দেয় এসপি তানভীররে.. এই কাহিনী জানিস? তোরে কোনদিন কইছি আমি বোকা***? তুই কী মনি করিস আরাফাত, খসরোর ভরসায় আমি ঢাকায় চো** বেড়াই? তোর মনে হয় তাই? খসরো, আরাফাত আমার টাকা চো**? টাকা দেয় আমার কাকা আবু বকর হোসেন জামাল। কালকেও পাঁচ হাজার টাকা লাগিছে। আমি জানি আমি থাকলে তুই ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারবি। এই বিশ্বাস আমার আছে বন্ধু কিন্তু আমি মাডার হয়ে যাব বন্ধু। আমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যাব বউ, বাচ্চা আছে বুঝছিস। নাইলে মনে কর হানিফ আবার মামলা টামলা দিয়ে..বুঝছিস?। তুই কী চাস আমি মাডার অইয়া যাই? আমি তোরে কথা কইলে, বাস্তব কথা কইলে তুই বিশ্বাস করবি? মনেত্তে কতা কইলে, আমি কতা কইলে তোর চোখে পানি চইলা আইব। আবার বোকের ভেতর অনেক যন্ত্রণা আছে। আমার যন্ত্রণার চেয়ে আমার বোকে অনেক অভিমান। আমার দুঃখ কষ্ট দেখার, আল্লাহ ছাড়া কেউ দেখে না সত্যি কথা বললাম। লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা আরাফাতের কাছ থেকে নিয়ে একটা টাকাও দেয় নাই। আমি জানি যে কোন জায়গা থেকে টাকা নেচ্ছে, আইসতেছে।

এবিষয়ে ইবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, আমাদের দুজনের মধ্যে কথা হয়েছে। কিভাবে বাইরে আসলো আমার জানা নেই। অডিও এর কথোপকথনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, বারবার আমাকে পদত্যাগ করতে বলেছে না করলে ক্যাম্পাসে নতুন নতুন সমস্যা তৈরী করবে।

ইবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জুবায়ের আল মাহমুদ এর সাথে মুঠোফোন বারবার যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এছাড়াও চেক করুন

অনলাইনে সদস্য নিচ্ছে কুভিকসাস

সাফায়েত উল্লাহ মিয়াজী: নতুন সদস্য সংগ্রহ করছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ সাংবাদিক সমিতি (কুভিকসাস)। শনিবার এ …