মাহমুদুল হাসান কবীর :
“রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে কিন্তু বইখানা অনন্ত যৌবনা যদি তেমন বই হয়”। সৈয়দ মুজতবা আলীর সাথে তালমিলিয়ে রুটি, মদ রেখে, প্রিয়ার কালো চোখে ভ্রুক্ষেপ না করে বইয়ের প্রেমে মত্ত হয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘তারুণ্য’। বইয়ের আলোয় আলোকিত হয়ে সমাজ, দেশ ও বিশ্বকে আলোকিত করার সুযোগ করে দিয়েছে তারুণ্য।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবন ও বিজ্ঞান ভবনের মাঝখানে রয়েছে দুটি বটবৃক্ষ। বটতলায় আড্ডায় মেতে উঠে শিক্ষার্থীরা। বন্ধুত্বের আড্ডা রেখে শিল্প সাহিত্য চর্চায় নিমগ্ন হয়ে উঠে অনেকেই। কাঠের তাকে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা বইগুলো থেকে বেছে নেয় পছন্দের বইটি। বটের ছায়ায় সেখানে বসে বই পড়ে আত্মিক উৎকর্ষ সাধন ও আত্মশুদ্ধিতে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় বই প্রেমীদের।
প্রতি বুধবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত তারুণ্যের সদস্যদের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে ভ্রাম্যমাণ ‘তারুণ্য লাইব্রেরী’। তারুণ্য শিক্ষার্থীদের পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে, শিল্প সাহিত্য চর্চা সহজলভ্য করতে ২০১৯ সালের ২০ মার্চ প্রতিষ্ঠা করে ‘তারুণ্য লাইব্রেরী’। এখানে রয়েছে প্রায় পাঁচশত বই। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন উর রশিদ আসকারী এ লাইব্রেরীর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর ২৩ অক্টোবর সদস্যদের জন্য তা খুলে দেয়া হয়।
যেকোন শিক্ষার্থী তারুণ্য লাইব্রেরী থেকে বই নিয়ে পড়তে পারে। এছাড়া বুক রিভিউ, সাহিত্য আড্ডা, লেখক পাঠক আড্ডাসহ সাহিত্য চর্চার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে তারুণ্য লাইব্রেরী।
‘অবারিত সম্ভাবনা নিয়ে জাগ্রত তারুণ্য’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ২০০৯ সালের ২৯ শে জুলাই যাত্রা শুরু করে তারুণ্য। তারুণ্য একটি অরাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবী ও জনকল্যাণমূলক সংগঠন যা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত। বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগানো, তরুণদের স্বেচ্ছাসেবী মনোভাব সম্পন্ন করে গড়ে তুলা, সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় অংশগ্রহণ, বানায়ন, রক্তদান, শীতবস্ত্র বিতরণ ও অসহায় শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় কাজ করে যাচ্ছে তারুণ্য।
তারুণ্য’র দুরন্ত পথিক আয়েশা সিদ্দিকা তন্বী বলেন, তারুণ্য’র কাজই মানুষের কল্যাণ করা কিন্তু তার দৃষ্টি শুধু মানুষের বাহ্যিক কল্যাণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তারুণ্য চায় মনের কল্যাণ সাধন করতে। এ কল্যাণ সাধনের জন্যই ‘তারুণ্য লাইব্রেরী’। কারণ বই জ্ঞানের পরিধি বাড়ায়। বই তার জ্ঞানের দ্বারা মানুষের জীবন আলোকিত করে। তারুণ্যের লক্ষ্য তার সদস্যদের ভিতর থেকে আলোকিত করা। ভিতর থেকে সঠিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাই তারুণ্য লাইব্রেরীর উদ্দেশ্য।
তারুণ্য’র সভাপতি শেখ রাইয়ান উদ্দীন বলেন, তারুণ্য এমন একটি প্লাটফর্ম যেখান থেকে সদস্যরা নৈতিক ও মানবিক গুণাবলী অর্জন করার পাশাপাশি নিজেদের বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলে। আমরা কাজের মাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ে তুলি আর এই ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে নিজেদের আবদ্ধ রাখি। আত্মিক ও মানসিক প্রশান্তির জন্য আমরা কাজ করি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিল্প সাহিত্য চর্চার একটি অন্যতম বড় মাধ্যম তারুণ্য লাইব্রেরি। এ লাইব্রেরি শিক্ষার্থীদের নিয়ে পাঠচক্র আয়োজন করার পাশাপাশি বুক রিভিউও নিয়ে থাকে। সকলের ভালবাসা ও আস্থার একটি জায়গা এই ” তারুণ্য”।
CNNEWS24.COM সত্যের সন্ধানে সবার সাথে মিলে মিশে
৬ মন্তব্য
Pingback: pg168
Pingback: ufabet789
Pingback: Tony88 สล็อตรวมค่ายเกมต่างประเทศ
Pingback: บาคาร่า sexy168
Pingback: bán rượu whisky chính hãng
Pingback: cat888