প্রচ্ছদ / চট্টগ্রাম বিভাগ / লেক ভরাট করে ম্যাজিস্ট্রেটকে প্লট!

লেক ভরাট করে ম্যাজিস্ট্রেটকে প্লট!

সিলিমপুর সিডিএ আবাসিক এলাকা

শামীমুর রহমান, চট্টগ্রাম

সিলিমপুর সিডিএ ( চট্টগ্রাম উন্নয়ন কৃর্তপক্ষ) আবাসিক এলাকার একমাত্র লেকটি একাংশ ভরাট করে সিডিএ একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে প্লেট দেওয়ার উদ্যেগ নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সিলিমপুর সিডিএ আবাসিক কল্যান সমিতির নেতারা অভিযোগ করে বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল আলমকে প্লট বরাদ্দ দেওয়ার জন্য লেকের একাংশ ভরাট করার উদ্যেগ নেয়া হয়েছে। এর আগেও প্রকল্পের লে – আউটে পরিবর্তন করে শিশু পার্কের জন্য বরাদ্দ করা যায়গায় নতুন ৭০ টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নতুন প্লটের জন্য খেলার মাঠ ও কবরাস্হানের জায়গা কাটছাড় করা হয়েছে। এবার সিডিএ চোখ পড়েছে
লেকের উপর।
প্লটের জন্য আবেদনের বিষয়ে ম্যাজিষ্ট্রেট সাইফুল আলম চৌধুরী মঠোফোনে বলেন, ‘ সিডিএ এর প্লটের বিষয়ে ম্যাজিষ্ট্রেট কিছু বলতে পারবে না। কোনকিছু জানার থাকলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে জানতে হবে।
সিডিএ’র প্রকল্প পরিচালক ( পিডি) মোঃ হাসান বলেন,
ম্যাজিষ্ট্রেট সাইফুল আলম চৌধুরী একটি প্লটের জন্য আবেদন করেছেন। প্লটটি লেকের পাশে একটি পরিত্যক্ত যায়গা। আমরা তা দেখেছি পরিমাপও করেছি। তবে এখনো চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
সাইট ইঞ্জিনিয়ার রুপম বলেন, এই বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। লেক ভরাট করার প্রশ্নেই উঠে না। কেউ আবেদন করেছে কিনা সেটাও আমার জানা নেই।
সিলিমপুর সিডিএ আবাসিক এলাকার কল্যান সমিতির
সভাপতি আরজু খান অবশ্য এর বিপরীত কথা বলেন,লেকের পাড়ে পরিত্যক্ত কোন যায়গা নেই। খেলার মাঠ, কবরস্থান সহ আবাসিক এলাকার বিভিন্ন যায়গায় নতুন করে ৭০ টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ দেওয়া অনেক প্লট এখনো বুঝিয়ে দেওয়া হয় নি। এছাড়া কয়েকটি প্লট পাহাড়ের মধ্যে হওয়ায় তা কাটাও যাচ্ছে না। এরই মধ্যে সব নিয়মকানুন উপেক্ষা করে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটকে একটি প্লট বরাদ্দ দিতে লেক ভরাট করার পায়তারা করছে সিডিএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আমরা লেকটি রক্ষার দাবি জানাচ্ছি।
লেকের পাড়ে বরাদ্দ না দেওয়ার অনুরোধ করছি।
সিলিমপুর সিডিএ আ/এ কল্যাণ সমিতির সেক্রেটারি অধ্যাপক মো. আমজাদ হোসাইন বলেন ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সাড়া বাংলায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে যা আজ দৃশ্যমান অথচ সিলিমপুর সিডিএ এখনো অজপাড়া। এখানে কোন উন্নয়ন হয়নি , সিডিএ কর্তৃপক্ষ অযৌক্তিকভাবে বারবার লে-আউট প্ল্যান পরিবর্তন করছে যা অত্যন্ত দু:খজনক। লেক ভরাট করে নৈসর্গিক সৌন্দর্য ও পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে সচিবকে প্লট বরাদ্দ দেয়া কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না, সিডিএ কর্তৃপক্ষের এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানাই।’
প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন -২০০০ অনুযায়ী
পুকুর জলাশয়, নদী খাল ভরাট করা বেআইনি। বাংলাদেশ পরিবেশ রক্ষণ আইন ২০১০ অনুযায়ী,জাতীয় অপরিহার্য স্বার্থ ছাড়া কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরকারি বা আধা সরকারি এমনি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বা ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুর বা লেক জলাধার ভরাট করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
কিন্তু এইসব আইনকে বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে সীতাকুণ্ডে ভরাট হচ্ছে, পুকুর, জলাশয় ও লেক।
উল্লেখ্য, ১৯৬০-৬১ সালে নগরীর অদুরে সীতাকুণ্ডের সিলিমপুর এলাকায় ১২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয় সিডিএর সর্ববৃহৎ আবাসিক প্রকল্প সিলিমপুর আবাসিক এলাকা। ১৯৭৯, ১৯৮৭,ও ২০০২ সালে ১৯৬ একর জায়গায় এ আবাসিক এলাকায় ‘এ’ ও ‘বি ব্লকে এক হাজার ২০৮ টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়।
তবে দীর্ঘ ৩৪ বছরে বিশাল এই আবাসিক প্রকল্পে ভবন নির্মাণ হয়েছে মাত্র ৪০ – ৫০ টি প্লটে। গ্যাস সংযোগ না থাকা, দুর্গম এলাকা ও যাতায়াত ব্যবস্হায় সমস্যার কারনে এখনো পুরোপুরি চালু হয়নি আবাসিক এলাকাটি। পরিপূর্ণ অবকাঠামো গড়ে না উঠলেও এ প্রকল্পের পূর্ব ও পশ্চিমাংশে বর্ধিতাংশে নতুন করে আরো ৭০ টি তিন ও চার কাঠা আয়তনের প্লট বরাদ্দ দিয়েছে সিডিএ।

এছাড়াও চেক করুন

রাজনৈতিক মামলায় পলাতক সৈয়দ মো: ওবায়েদ উল্যাহ

ফেনী সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের দক্ষিন খাসেবাড়ী মোস্তাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ মো: ওবায়েদ উল্যাহ পিতার- …