ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ১২তম উপাচার্য হিসেবে আগামী ২০ আগস্ট মেয়াদপূর্ণ করতে যাচ্ছেন অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন উর রশিদ আসকারী। এর আগে কেউ মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেন নাই। এই দীর্ঘ চার বছরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক, অবকাঠামোগত, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতায় কেমন অবদান রেখেছেন, কেমন নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। উপাচার্য হিসেবে কেমন পারদর্শী ছিলেন এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মতামত তুলে ধরেছেন মাহমুদুল হাসান কবীর।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন বলেন, কোনো মানুষই শতভাগ পরিপূর্ণ না, মানুষের সীমাবদ্ধতা থাকে। সব মিলিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতায় প্রশাসক হিসাবে উপাচার্য ড. রাশিদ আসকারী ভালো ছিলেন। আমার চাকরির ২৩ বছরে যা দেখেছি বিগত অন্যান্য ভিসির তুলনায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। মানুষের সবচেয়ে বড় গুণ সততা। কেউ সৎ হলে অনেক দূর যেতে পারে। আমার জানা মতে তিনি সৎ ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু পরিষদের নির্বাচিত সভাপতি অধ্যাপক ড. রুহুল কে এম সালেহ বলেন, আসকারী মেয়াদপূর্ণ করছে কিন্তু এর আগে কোন উপাচার্য আন্দোলন সংগ্রাম ব্যতীত বিতারিত হয়নি। এই চার বছরে দুর্নীতি বা অপব্যবহারের জন্য আন্দোলন হয়নি। অতীতের যেকোনো প্রশাসনের থেকে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও অবকাঠামোগতভাবে আসকারীর অগ্রগতি ছিল। বিগত যে প্রশাসন এসেছে তারমধ্যে বর্তমান প্রশাসনই উল্লেখযোগ্য ও সফল।নিতান্তই যদি কেউ অন্ধ না হয়, শত্রুতার জন্য শত্রুতা না করে তাদের এটি স্বীকার করতে হবে।একাডেমিক, সেশন জ্যাম দূরীকরণ, সময়োপযোগী বিভাগ খোলা, বঙ্গবন্ধুর মুর্যাল তৈরির ক্ষেত্রে এ প্রশাসন অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। এর আগে আওয়ামীপন্থী ভিসিরাই বঙ্গবন্ধুর মুর্যাল তৈরি করেনি বা করার সাহস পায়নি। আমি মনে করি তিনি যথেষ্ট যোগ্যতা ও প্রাজ্ঞতার সাথে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নানাবিধ উন্নয়ন সাধন করেছেন। প্রশাসনিক ও একাডেমিক অগ্রগতি আরো গতিশীল করার জন্য সরকার এরকম প্রশাসন দ্বিতীয় বার রাখবেন বলে আশা করি।
প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, বর্তমান প্রশাসনের আমলে অনাকাঙ্ক্ষিত একদিনের জন্যও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়নি। গত চার বছরে শিক্ষার যে পরিবেশ ছিল তা যথেষ্ট সন্তোষজনক, অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনা ঘটেনি যা শিক্ষার্থীদের জন্য অন্তরায় হয়েছে। অবকাঠামোগত যে উন্নয়ন হয়েছে তা চোখে পড়ার মতো যেমন বঙ্গবন্ধু মুর্যাল। গত চার বছরে যে সংখ্যাক শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ হয়েছে আমার ২২ বছরের শিক্ষকতা জীবনে এটা চোখে পড়ার মতো ছিল। সার্বিক বিবেচনায় প্রশাসক হিসাবে দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতায় তিনি ভালো ছিলেন।
অফিসার্স এসোসিয়েশন এর আহ্বায়ক উপ-রেজিস্ট্রার আলমগীর হোসেন বলেন, ভালো প্রশাসন না হলে উপাচার্য ড. রাশিদ আসকারীর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা না কারণ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অতীতে কেউ মেয়াদ শেষ করতে পারে নাই। বেশি কাজ করতে গেলে সমালোচনা একটু বেশিই হয় এটাই স্বাভাবিক। কিছু কিছু লোকের কাছে তার কার্যক্রম ভালো না ও লাগতে পারে। তবে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা হিসাবে নয় সাবেক ছাত্র ও ছাত্র নেতা হিসাবে দীর্ঘদিন যা দেখেছি আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক, একাডেমিক উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক মানে নেওয়ার জন্য ভদ্রলোক চেষ্টা করেছেন এবং অনেক সফল হয়েছেন। আশা করি সরকার যদি তাকে পুনরায় দায়িত্ব দেয় ইনশাআল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় আরো ভালো অবস্থানে যাবে।
কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি শামসুল ইসলাম জোহা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে তিনি মেয়াদপূর্ণ করেছেন আমরা কর্মকর্তা চাকরি করি তার আন্ডারে আমরা ত ভালোই বলবো। ব্যক্তিগত মতামত আর সমিতির মতামত এক জিনিস না। ওনার আমলে কর্মকর্তা সমিতির কোনো দাবি আদায় হয়নি।
সহায়ক কর্মচারী সমিতির সভাপতি আব্রাহাম লিংকন বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাপটে এ যাবতকালে যতজন উপাচার্য এসেছেন বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী এই দীর্ঘ চার বছরে একাডেমিক, প্রশাসনিক ও অবকাঠামোগতভাবে অনেক উন্নয়নের ছোঁয়া লাগিয়েছে। তার দক্ষ নেতৃত্বে, যোগ্যতা, মেধা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিকীকরণের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান উপাচার্য স্যার আসলেই বিশ্ববিদ্যালয়কে উন্নতির দ্বার প্রান্তে পৌঁছে নিয়ে গেছেন।
সাধারণ কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোঃ আতিয়ার রহমান বলেন, আমি দায়িত্বে থাকাকালীন ১২জন ভিসির সাথে কাজ করেছি। আসকারী সুশিক্ষিত, সৎ ও সুবিবেচক। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন মেধা, বুদ্ধি থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় চালানো যায় ও উন্নয়ন করা যায়। সেশনজট দূরিকরণ, একাডেমিক ও অবকাঠামোগতভাবে উন্নয়ন করেছ।
CNNEWS24.COM সত্যের সন্ধানে সবার সাথে মিলে মিশে
২ মন্তব্য
Pingback: ตรวจ หวย ลาว
Pingback: กราฟีน