অনলাইন ডেস্কঃ
পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তিদের শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনকে বলা হয় পেডোফিলিয়া। এটা এক ধরনের যৌন বিকৃতি
সাম্প্রতিক সময় আশংকাজনক হারে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে শিশুরা। ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে যে কোনো বয়সী শিশু। বয়স্ক, কিশোর কিংবা মধ্যবয়স্ক কোনো অসুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের যৌন উদ্দীপনার শিকার হচ্ছে তারা। প্রতিনিয়তই শিশুকামী বা পেডোফাইলদের হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা।
পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তিদের শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনকে বলা হয় “পেডোফিলিয়া”। এটা এক ধরনের যৌন বিকৃতি। এই ব্যক্তিরা শিশুদের দেখে তীব্র যৌন-উত্তেজনা বোধ করে। আর সুযোগ বুঝে শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন চালায়। পুরুষদের মধ্যেই এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে চল্লিশোর্ধ্ব পুরুষদের মধ্যেই এদের সংখ্যা বেশি। নারীদের মধ্যেও এই সমস্যা দেখা যায়, তবে তুলনামূলক কম।
মানসিক বিকারগ্রস্ত এসব মানুষ শিশুদের ওপর বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন চালায়। তাদের কর্মকাণ্ডকে “চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ” বলা হয়ে থাকে।
২০১৯ সালে সারাদেশে ধর্ষণের ঘটনা আগের বছরের তুলনায় বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে বলে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বেড়েছে শিশু নির্যাতনের হারও। ২০১৯ সালে শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণ, অপহরণ ও নিখোঁজের পর মোট ৪৮৭ জন শিশু নিহত হয়েছে। ২০১৮-তে এই সংখ্যা ছিল ৪১৯।
শিশু যৌন নির্যাতনগুলো কী রকম সে সম্পর্কে শিশুর বাবা-মায়ের পরিষ্কার ধারণা থাকা উচিৎ। বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয় শিশুরা। এরমধ্যে স্পর্শের একটা বিষয় থাকে। সবার ছোঁয়া বা স্পর্শের ধরণ কিন্তু এক নয়। মা-বাবা ও ভাই-বোনের ছোঁয়ায় থাকে স্নেহ-মমতা। তাতে থাকে এক অগাধ বিশ্বাস ও নিরাপত্তার আবেশ। আর অন্যদিকে, অসৎ উদ্দেশ্যপ্রবণ মানুষের ছোঁয়ায় কিন্তু সে বিষয়টি থাকে না। এমনকি শিশুকে কোলে নেওয়ার নাম করেও অ্যাবিউজ করার ঘটনাও আজকাল অনেক শোনা যায়।
এসব মানুষ শিশুকে স্পর্শ করে ব্যথা দিয়ে এবং প্রাইভেট বডিপার্টগুলোতে হাত দিয়ে। সুযোগ পেলে এরাই হয়ে ওঠে একেকজন শিশু ধর্ষক।
পেডোফিলিয়া: কারা দায়ী?
পেডোফিলিয়া একধরনের সেক্সুয়াল ডিজঅর্ডার বা যৌন বিকৃতি। পেডোফিলিয়া আক্রান্ত রোগীরা কেবল শিশুদের (যারা এখনও বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছায়নি) প্রতি আসক্ত থাকে। কেন তারা এই ঘৃণ্য আচরণটি করে, তা নিয়ে ব্যাপক গবেষণা হয়েছে।
মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, যেসব শিশু শৈশবে দীর্ঘসময় ধরে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিল এদের কেউ কেউ যৌবনে পেডোফাইলে পরিণত হয়।
পেডোফাইলদের হাত থেকে শিশুকে বাঁচাতে করণীয়:
– শিশু যখন তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া কোনো কিছু সম্পর্কে আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাইবে তখন সেসব তার শিশুমনের কল্পনা মনে করে উড়িয়ে দেবেন না। সেসব কথার আড়ালেই হয়তো লুকিয়ে থাকতে পারে যৌন নির্যাতনের গল্প।
সবার আগে আপনার সন্তানকে কয়েকটি বিষয়ে শিক্ষা দিন-
– সে যেন আপনার অনুমতি ছাড়া অপরিচিত কারও না যায়, এমনকি পরিচিত কারও কাছে যাওয়ার আগেও আপনার অনুমতি নেয়।
– তার সঙ্গে কেউ কোনো ধরনের অপ্রত্যাশিত ব্যবহার করে তা যেন অবশ্যই আপনাকে জানায়। কারও কাছ থেকে শারীরিক আঘাত পেলে যেন অবশ্যই চিৎকার করে।
– বাবা-মাকে না জানিয়ে যেন অপরিচিত কোনো জায়গায় সে না যায়।
– অপরিচিত বা স্বল্পপরিচিত কেউ ডাকলে বা কিছু খেতে দিলে যেন সে রাজি না হয়।
নিজের শরীর সম্পর্কে শিশুকে সচেতন করে তুলুন। তাকে জানান, কোন আদর কতটুকু গ্রহণ করবে বা করবে না, তা বেছে নেওয়ার সম্পূর্ণ অধিকার তার। যেকোনো সময় যে কোনো আদরকে যাতে সে না বলতে পারে। শিশুকে তার সারা শরীরের বিভিন্ন অংশের (শরীরের ব্যক্তিগত অংশসহ) সঠিক (অ্যানাটমিক্যাল নাম) নাম শেখান। শরীরের স্পর্শকাতর স্থান ও প্রাইভেটপার্টস সম্পর্কে ছোট থেকেই শিশুকে সচেতন করে তুলুন। তার শরীরের কোনো স্থানে যদি কেউ অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে স্পর্শ করে, তবে অবশ্যই সে যেন আপনাকে জানায়।
– সন্তানকে বাবা-মা, ভাইবোনের স্নেহমাখা স্পর্শ এবং অন্য স্পর্শের মধ্যকার তারতম্য সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দিন।
– শিশুকে জানান কিছু স্পর্শ ভালো না লাগলেও সেগুলো তার শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হতে পারে। যেমন পরিষ্কার করার জন্য স্পর্শ করা, চিকিৎসকদের স্পর্শ ইত্যাদি। শিশুকে বোঝান, যখন বড়রা তাকে পরিষ্কার করা (ডায়াপার পরিবর্তন, গোসল করানো, বাথরুমে নিয়ে যাওয়া, শৌচকাজে সাহায্য করা) বা স্বাস্থ্যের (চিকিৎসককে দেখানো) বাইরে অর্থাৎ প্রয়োজন ছাড়া ব্যক্তিগত অংশ (বুক, নিতম্ব, ঠোঁট ও যৌনাঙ্গ) স্পর্শ করবে তখন তা অনিরাপদ স্পর্শ হয়ে ওঠে। এমন ধরনের কোনো স্পর্শ কোনো কারণেই মেনে না নিতে বলুন তাকে। যে আদর করার পর ভয় দেখানো হয় বা অন্যের কাছে না বলার জন্য বা একান্ত গোপন খেলা বলে ধারণা দেওয়া হয়, সেসব আদর করা মানুষকে চিহ্নিত করতে শিশুকে সাহায্য করুন।
– শিশুর সঙ্গে গল্প করুন। আপনার অনুপস্থিতিতে সে কার কার সাথে মিশেছে, কীভাবে খেলেছে, কী খেয়েছে- এসব বিষয় গল্পছলে জেনে নিন শিশুদের কাছ থেকে।
– হয়তো আপনি খুব ব্যস্ত থাকেন। আপনার এই ব্যস্ততার সুযোগ যেন কেউ না নিতে পারে সে ব্যবস্থা নিন।
– সন্তান যৌন হেনস্থার শিকার হলে এবং আপনাকে বিষয়টি জানালে তা চেপে না গিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিন। যদি দায়ী ব্যক্তিটি পরিবারেরও কেউ হয়, শিশুর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।
– কখনোই বাইরের কারও প্রতি অন্ধবিশ্বাস করে সন্তানকে তার হাতে ছেড়ে দেবেন না। আপনি জানেন না কে কখন পাশবিক হয়ে উঠবে!
– শিশুকে কখনও কারও সঙ্গে একা থাকতে দেবেন না।
– পারলে ঘরে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর ব্যবস্থা করুন।
CNNEWS24.COM সত্যের সন্ধানে সবার সাথে মিলে মিশে

৮ মন্তব্য
Pingback: Mega Moolah
Pingback: aviator game
Pingback: เซรั่มรักษาผมบาง
Pingback: 1win app scaricare
Pingback: พรมปูพื้นรถยนต์
Pingback: หาแม่บ้าน
Pingback: รับทำเว็บไซต์
Pingback: Sweet Bonanza slot