প্রচ্ছদ / ঢাকা / আদালতে যেভাবে ‘আইএস’ এর টুপি নিয়ে আসলো রিগ্যান?

আদালতে যেভাবে ‘আইএস’ এর টুপি নিয়ে আসলো রিগ্যান?

সিএন নিউজ অনলাইন ডেস্কঃ

গুলশানের হলি আর্টিজানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাকিবুল হাসান রিগ্যানের মাথায় ইরাক ও সিরিয়া ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সদস্যদের ব্যবহৃত টুপির মতো টুপি দেখা গেছে। আদালতের রায় ঘোষণার সময় তার ওই টুপি পরা নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

রায় ঘোষণার সময় আদালতে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে রিগ্যানের কাছে এই ধরনের টুপি কীভাবে আসলো বা কারা এটি সরবরাহ করলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

রায় ঘোষণার সময় পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, আইএসের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য অপরাধীরা হলি আর্টিজানে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন সময় বলেছে এবং এই মামলার তদন্ত করতে গিয়েও বার বার উঠে এসেছে, বাংলাদেশে আইএসের কোনো কার্যক্রম নেই। এই মামলায় সাজাপ্রাপ্তরাও আইএসের সঙ্গে যুক্ত-এমন কোনো তথ্যপ্রমাণও মেলেনি। তাহলে কি তারা দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আইএসের ব্যানারটাই ব্যবহার করেছে?

রায় ঘোষণার সময় দেখা যায়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন আসামি আদালতের এজলাসে মাথায় আইএসের টুপি পরে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছিলেন। রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে হৈচৈও করেছেন এবং বিভিন্ন স্লোগান দিয়েছেন। তাদের স্লোগানও আইএসের স্লোগানগুলোর মতো।

আদালতের রায় ঘোষণার পর কাঠগড়া থেকে তাকে যখন লিফটে তোলা হয় তখন সাংবাদিকরা তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন তিনি কেনো এটা পরেছেন? এ প্রশ্ন এড়িয়ে তিনি বলেন, আদালতের এই রায়ে আমি বিচলিত নই। ওই সময় তিনি বিজয় চিহ্নও (ভি চিহ্ন) দেখাচ্ছিলেন। কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে তোলার পরেও তার মাথায় ওই টুপি দেখা যায়।

হলি আর্টিজানের মতো একটি স্পর্শকাতর মামলার আসামি যিনি দীর্ঘদিন কারাবন্দি আছেন, তিনি কীভাবে এমন একটি টুপি আজ পরতে পারলেন। কীভাবে তার কাছে এই টুপি আসলো? এই প্রশ্ন করা হয়েছিল রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবুকে।

তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি বলতে পারব না। জেল কর্তৃপক্ষ, যেখান থেকে তাদের আদালতে আনা হয়েছে এই জবাবটা তারা দেবে। টুপি কেউ পরতেই পারে এতে কোনো সমস্যা নাই কিন্তু একটা সংগঠনের প্রতীকী টুপি পরা খুবই অন্যায়। উদ্দেশ্যমূলকভাবে এটা তাকে পরতে দেওয়া কোনোভাবেই উচিত হয়নি।

ওই আসামির কাছে আইএসের নিদর্শন সদৃশ টুপি কীভাবে আসলো বা কে তাকে এটি সরবরাহ করলো তা তদন্ত করা দরকার বলেও মত দেন তিনি।

জানা গেছে, কারাগার থেকে কয়েক দফা তল্লাশি করে আসামিদের আদালতে আনা হয়। এমনকি জুতা খুলে খালি পায়ে ঢোকানো হয়েছিল এজলাসে। তাহলে এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতা আছে কিনা?

আব্দুল্লাহ আবু বলেন, নিরাপত্তার অনেকগুলো ধাপ পার করে তাদের আদালতে আনা হয়েছে। অতএব এটা অবশ্যই দেখা দরকার যে, এই টুপিটা তারা কোথায় পেলো, কীভাবে ফিতা লাগালো। আমি মনে করি, এই জিনিসটা অত্যন্ত স্পর্শকাতর।

এ বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এই আসামিরা তো দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ কাস্টডিতে। তাদের কাছে এই টুপি কীভাবে এসেছে সেটা নিয়ে আমার মন্তব্য করা তো ঠিক হবে না।

ওদিকে আইএস-এর টুপি মাথায় দিয়ে হলি আর্টিজান হামলা মামলার আসামির আদালতে প্রবেশের বিষয়টি তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে মামলার রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাতে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বিষয়টি কিভাবে হয়েছে তা এখন আমি কীভাবে বলবো। তবে এজলাসে আইএসের টুপি মাথায় আসামির আসার বিষয়টি তদন্ত করা হবে।

মন্ত্রী রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর খালাস হওয়া আসামির বিরুদ্ধে আপিলের বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলেও জানান।

আজ বেলা সোয়া ১২টায় তিন বছর আগের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা মামলার রায় দেন আদালত। রায়ে ৮ আসামির মধ্যে ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে খালাস দেয়া হয়।

বিচার শুরু হওয়ার এক বছরের মাথায় বহুল আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণা করলেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রাকিবুল ইসলাম রিগ্যান ওরফে রাফিউল ইসলাম, রাজীব গান্ধী ওরফে জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ আসলাম হোসেন ওরফে র‍্যাশ, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মোহাম্মদ হাদিসুর রহমান সাগর ওরফে সাগর, মামুনুর রশিদ রিপন, শরিফুল ইসলাম খালেদ। আর খালাস পেয়েছেন নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান।

২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে ২০ জন দেশি-বিদেশি নাগরিককে হত্যা করে জঙ্গিরা। যাদের মধ্যে ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, ১ জন ভারতীয় ও ৩ জন বাংলাদেশি।

এছাড়াও চেক করুন

রাজনৈতিক মামলায় পলাতক সৈয়দ মো: ওবায়েদ উল্যাহ

ফেনী সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের দক্ষিন খাসেবাড়ী মোস্তাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ মো: ওবায়েদ উল্যাহ পিতার- …