সিএন নিউজ২৪.কম।
যদি প্রশ্ন করি এমন কোন ভাষা আছে যার জন্য মানুষ নিজের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে? তবে তার একটাই জবাব হবে বাংলা ভাষা। আর হ্যাঁ! আমাদের প্রিয় মাতৃভাষা বাংলা ভাষা। এই ভাষার জন্য ১৯৫২ সালে আমাদের দেশের কিছু বীর সন্তানরা তাদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিল ঢাকার রাজপথে। সে রক্তস্রোতের বিনিময়ে অর্জিত এই মাতৃভাষা।
একুশে ফেব্রুয়ারি এখন ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে বিশ্বে পালিত হচ্ছে। একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস কিন্তু দীর্ঘ। এর গুরুত্ব ও তাৎপর্যের পরিধিও ব্যাপক।
রক্তের বিনিময়ে এই ভাষা পেলাম কিন্তু আমরা কি বাংলাকে সর্বস্তরে ব্যবহার করতে পারছি? বাংলা ভাষাকে এখন আর কেউ উচ্চস্তরে ব্যবহার করতে চান না। সবার মাঝে কেমন যেন ইংরেজির প্রভাব লক্ষ করা যায়। ইংরেজি ব্যবহার করলেই যেন তারা নিজেদের উচ্চস্তরের লোক ভাবেন। যেমন বিয়ে হচ্ছে বাঙালিয়ানায়; কনেকে শাড়ি আর বরকে পাগড়ি মাথায় শেরওয়ানি পরিয়ে। অথচ তারা বিয়ের কার্ডটি ইংরেজিতে ছাপান। এতে তারা নিজেদের গর্বিত মনে করেন। উচ্চশ্রেণির লোক হিসেবে নিজেদের ভাবেন। এটা কি নিজ ভাষার প্রতি অবজ্ঞা নয়? এমন আরও উদাহরণ আছে। আমরা বাঙালি বাংলা শব্দ ‘মা’কে ‘মা’ না বলে অন্য ভাষায় বলি আম্মা, মাম্মী, মাম্মা বা এ ধরনের অন্য কিছু। বাংলা শব্দ ‘বাবা’ না বলে অন্য ভাষায় বলি আব্বা, পাপ্পা, ডেডি বা এ ধরনের অন্যকিছু। আমরা এ বিদেশি শব্দ উচ্চারণ করে নিজেদের উচ্চমানের লোক হিসেবে ভাবি। নিজ সংস্কৃতিকে ঘৃণা করে অন্য অপসংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরি সম্মানজনকভাবে। এটা কি নিজ ভাষার প্রতি অবজ্ঞা নয়?
শুধু তাই নয়, বাংলা ভাষাকে সংরক্ষণের জন্য গঠন করা হয়েছিল বাংলা একাডেমি এমনকি আরেকটি রয়েছে বাংলা ভাষা ইনস্টিটিউট। অথচ এসবের নিজের নামটাই হলো বিদেশি ভাষায়। এর চেয়ে অবাক হওয়ার আর কী আছে? আমাদের তরুণরা এখন বিদেশী সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। তারা এখন কথায় কথায় হিন্দি চলচ্চিত্র, ইংরেজি ও তামিল চলচ্চিত্রসহ বাহিরের সংস্কৃতির প্রতি মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে ঝুঁকে পড়ছে। এমনকি বিদেশি পোশাকের প্রতি পর্যন্ত আকৃষ্ট হচ্ছে! এসবের পরিত্রান আজ সময়ের দাবি।
বিশ্বের কোনো দেশে কিন্তু মাতৃভাষার জন্য এভাবে আন্দোলন হয়নি। সেদিক দিয়ে বাংলা ভাষার একটি বিশেষ স্থান বিশ্বে আছে, যা সবার ঊর্ধ্বে। তাই আকাশ সংস্কৃতির প্রভাব কমিয়ে সরকারকে নিজ দেশের চ্যানেলগুলোর প্রতি সবাইকে; বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহ বাড়িয়ে তুলতে হবে। তাহলেই হয়তো একুশে ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করা যথার্থ হবে।
লেখকঃ
প্রধান সহ-সম্পাদক,
সি এন নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম।
CNNEWS24.COM সত্যের সন্ধানে সবার সাথে মিলে মিশে

৭ মন্তব্য
Pingback: อ่านมันฮวา
Pingback: Fox888
Pingback: Giffarine
Pingback: uofdiyala
Pingback: bio ethanol corner fireplace
Pingback: เทปใส
Pingback: แทงหวยออนไลน์