সিএন নিউজ ডেস্কঃ
করোনাভাইরাসের আর্থিক ক্ষতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ৭২,৭৫০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন।
গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই ঘোষণা দেন তিনি।
সংবাদ ব্রিফিংটি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
এই সহায়তা প্যাকেজ থেকে বৃহৎ শিল্প খাতে ৯% হারে ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ সুবিধা দেয়া হবে। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ৪.৫% অর্থ সরকার ভর্তুকি দেবে সরকার।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতে ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের জন্য ৪% সুদে ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ সুবিধা দেয়া হবে।
এক্ষেত্রে সরকার ৫% অর্থ সরকার ভর্তুকি দেবে সরকার।
গত কয়েক বছর ধরে ক্রমাগত বেড়ে চলা জিডিপির প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আর্থিক খাতকে সচল রাখার জন্য তিন ধাপে সরকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
আশু, স্বল্প এবং মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
আশু পরিকল্পনার মধ্যে:
সরকারি ব্যয় বাড়ানো
সরকারি ব্যয়ে বিদেশ ভ্রমণ হ্রাস
বিনামূল্যে খাবার বিতরণ
১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ
বয়স্ক/বিধবা ভাতা কর্মসূচী বাড়ানো
গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ
মুদ্রা সরবারহ বাড়ানো
রপ্তানি উন্নয়ণ তহবিল নতুন করে দেয়া
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সেটা থেকে উত্তরণে চার ধাপে কর্মপরিকল্পনাও ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা।
ব্রিফিংয়ের শুরুতেই বাংলাদেশের অর্থনীতির যে খাতগুলো ক্ষতির মুখে পড়তে পারে, সেগুলো তিনি বিস্তারিত তুলে ধরেন।
আমদানি ব্যয় এবং রপ্তানি আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৫% হ্রাস পেয়েছে। অর্থবছর শেষে এই হ্রাসের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
চলমান মেগা প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন, অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং ব্যাংকে সুদের হার কমিয়ে আনার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন দেরিতে হওয়ার কারণে বেসরকারি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত মাত্রায় অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সেবাখাতের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে হোটেল, রেস্তোরা, পরিবহন, বিমান চলাচলের ওপর।
অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের শেয়ার বাজারেও বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের চাহিদা হ্রাসের কারণে এর মূল্য ৫০% শতাংশের বেশি হ্রাস পেয়েছে। যার একটি বিরূপ প্রভাব পড়বে প্রবাসী আয়ের ওপর।
বাংলাদেশে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩.০২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নিত হবে বলে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক প্রাক্কলন করেছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে।
দীর্ঘ ছুটি বা কার্যত লকডাউনের ফলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বন্ধ এবং পরিবহন সেবা ব্যহত হওয়ায় স্বল্প আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস এবং সরবরাহ চেইনে সমস্যা হতে পারে।
চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের পরিমাণ বাজেটে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম হবে। এর ফলে অর্থবছরের শেষে বাজেট ঘাটতি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
বিগত তিন বছর ধরে ধারাবাহিক ৭% শতাংশের অধিক হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৮.১৫% শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রধান চালিকাশক্তি ছিল শক্তিশালী অভ্যন্তরিন চাহিদা, সহায়ক রাজস্ব ও মুদ্রানীতি। সামষ্টিক চলকসমূহে নেতিবাচক প্রভাবের কারণে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেতে পারে।
ইতোমধ্যে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়েছে বলে ঘোষণা করেছে আইএমএফ।
পুঁজিবাজারে বিগত কয়েক সপ্তাহে ২৮%-৩৪% দরপতন ঘটেছে।
অর্গানাইজেশন ফর ইকোনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (ওইসিডি) জানিয়েছে, এই মন্দা প্রলম্বিত হলে বিশ্ব প্রবৃদ্ধি ১.৫% শতাংশে নেমে আসবে।
বিশ্বব্যাপী বিপুল জনগোষ্ঠী কর্মহীন হয়ে পড়বে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মন্দা দীর্ঘস্থায়ী হলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম মানুষ এমন মহামন্দার সম্মুখিন হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
CNNEWS24.COM সত্যের সন্ধানে সবার সাথে মিলে মিশে
৩ মন্তব্য
Pingback: float that boat
Pingback: BETFLIX
Pingback: เว็บตรง สล็อต