সিএন নিউজ২৪.কম ।
সারা পৃথিবী আজ করোনার তান্ডবে উলট পালট হয়ে আছে। আধুনিক জীবন থমকে আছে । সারা বিশ্বে প্রায় ২৪ লক্ষ মানুষ এই সংক্রমণে সংক্রমিত হয়েছে, প্রায় ১ লক্ষ ৬৪ হাজার মানুষ মারা গিয়েছে ইতিমধ্যে। এছাড়াও, করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক মেরুদন্ডে আঘাত করেছে, কোন সন্দেহ নেই এতে। অর্থনৈতিক যে ধ্বস শুরু হয়েছে তা কবে নাগাত ঠিক হবে বলাও মুসকিল। বিভিন্ন ব্যবসায় অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়ে গেছে, চাকরি হারাচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। বেচে থাকাটাই এখন বিশাল বড় চ্যালেঞ্জ। এতো হতাশার ভিতরেও মানুষ স্বপ্ন নিয়ে বাচতে চায়, প্রকৃতির সাথে লড়াই করেই মানুষ টিকে আসছে শত শত বছর ধরে। পৃথিবীর এই মহা দুর্দিনে সবুজ পণ্য বা পরিবেশ বান্ধব পণ্য হতে পারে ভবিষ্যত পৃথিবীর এই ধকল সামাল দেয়ার একমাত্র হাতিয়ার। এছাড়ায়ও মানুষের জীবন যাত্রার ব্যবহারিক পরিবর্তনও সামাল দিতে সহায়তা করবে এই পৃথিবীর নিকট ভবিষ্যতের ধকল।
পরিবেশবান্ধব পণ্য বলতে আমরা সেসকল পণ্যসামগ্রীকে বুঝি, যেগুলো উৎপাদন থেকে শুরু করে নিষ্পত্তি পর্যন্ত পরিবেশের কোন প্রকার ক্ষতি করে না। অন্যকথায়, এই পণ্যগুলো তাদের উৎপাদিত দূষনকে হ্রাস করে পরিবেশের সংরক্ষনে ভূমিকা রাখে। পরিবেশ বান্ধব পণ্যগুলো আমাদের চারপাশে ফেলে দেয়া সামগ্রী থেকেও বানানো যেতে পারে। বর্তমান বিশ্ব পরিবেশ বান্ধব পণ্য এবং পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তির ব্যাপারে অনেক আগ্রহী এবং প্রায় সকল দেশেই সরকারীভাবে এসব পণ্যকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
করোনা মোকাবিলায় সারা বিশ্ব হিমশিম খাচ্ছে, অর্থনীতির চাকা আটকে গিয়েছে মহামারির চোরাবালিতে! যে দৃশ্যমান সমস্যাগুলো দেখা যাচ্ছে এগুলো থেকে পৃথিবী উঠে আসবে, কেউ জানে না কত দিন লাগবে , হয়তোবা কয়েক মাস কিংবা কয়েক বছর। পৃথিবীর এই অর্থনৈতিক খড়া কাটিয়ে উঠতে সারা বিশ্বে হয়তোবা আরেকটি শিল্পযুগ আসতে পারে, হয়তোবা প্রযুক্তির আরোও বিকাশ ঘটতে পারে, এসকল সম্ভাব্য ভবিষ্যতের মধ্যে নিশ্চিত একটা ভবিষ্যত হচ্ছে- পৃথীবি আরোও কয়েকগুন দূষনের সম্মুখীন হতে যাচ্ছে।
করনো পরবর্তী সময়ে আমাদের বাসযোগ্য পৃথিবী বলি হবে আবারো, দূষণ বেড়ে যাবে কয়েকগুন, প্রকৃতি আবার তার স্বাভাবিক রুপ হারাবে। কিন্তু আমরা আমাদের ব্যবহারিক জীবনের অভ্যাস পরিবর্তন কিংবা প্রযুক্তি ব্যবহারে পরিবেশ বান্ধব হলে পৃথিবী বেচে যাবে, আমাদের পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হবে না। আমরা চাইলেই আমাদের ফেলনা জিনিসপত্র দিয়ে নতুন জিনিস বানিয়ে কিংবা ব্যবহার যোগ্য পণ্যকে ফেলে না রেখে ব্যবহার চলমান রেখে দূষণের পরিমানকে আটকে দিতে পারি। আমাদের মধ্যে অনেকেই পুরোনো ফোন নষ্ট হলে নতুন ফোন কিনে ফেলি, কিংবা ব্যবহারকৃত কোন যন্ত্রাংশ নষ্ট হলে নতুন যন্ত্রাংশ কিনতে সাচ্ছন্দবোধ করি। যদি আমরা চাই, আমরা এসকল যন্ত্রাংশ মেরামত করে ঠিকই ব্যবহার করতে পারি, এতে করে কি হবে? আমাদের অর্থ অপচয় কম হবে, নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন কম হবে এবং সর্বোপরি, দূষণ কম হবে। আমাদের এরকম ছোট ছোট অবদানই আমাদের পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখবে। আমরা খুব শীঘ্রই করোনাকে মোকাবিলা করে আমাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবো। তবে, সে পৃথীবির বায়ু হবে বিশুদ্ধ, পরিবেশ হবে বাসযোগ্য। আর এসব কিছু- পরিবেশ বান্ধব পণ্য কিংবা পণ্যের পুনরায় ব্যবহার নিশ্চিত করলেই সহজতর হবে।
মোঃ জাহিদুল হক
পরিবেশ বিজ্ঞান ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
CNNEWS24.COM সত্যের সন্ধানে সবার সাথে মিলে মিশে
