প্রচ্ছদ / কুমিল্লা ও নাঙ্গলকোট / ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে না ফেরার দেশে মনোহরগঞ্জের এক যুবক!

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে না ফেরার দেশে মনোহরগঞ্জের এক যুবক!

আব্দুর রাজ্জাক (বিশেষ প্রতিনিধি)
শারিরিক অসুস্থ হয়ে নোয়াখালীর মাইজদি হাসপাতালে মারা গেলেন মনোহরগঞ্জের ফিরোজ নামের এক যুবক। তার বাড়ি উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের আশিয়াদারী গ্রামে। আজ রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা গেছে। (ইন্নালিল্লাহি……রাজেউন)। বাবা- মায়ের একমাত্র ছেলে ছিল সে। তার তিনটি বোন রয়েছে। পাঠকদের জন্য তার ফেসবুকে দেওয়া পোস্ট টি তুলে ধরা হলো!

জীবনের শেষ স্ট্যাটাসটা লিখেই গেলাম!
আসলে আমি কি?
জীবনে না পারলাম বাবা-মায়ের ভালো সন্তান হতে! না পারলাম বোনদের ভালো একজন ভাই হতে না পেরেছি অনাত্মীয় স্বজনদের কাছে ভালো কেউ হতে! এমন কি কারো মনের মতোও হতে পারি নি যদিও কারো কাছে এখনো অনেক প্রিয় কিন্তুু তার ফ্যামেলির কাছে যৌগ্য হতে পারি নি। বন্ধুদের কাছে ভালো বন্ধু হয়ে উঠতে পারি নি। জীবনে শুধু সমস্যা আর সমস্যা! পরিবারের চাপ,ভবিষ্যৎ চিন্তা ভাবনা,চাকরি,লাইফ পার্টনার,ডিপ্রেশন সব মিলিয়ে মনে হয় দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ ৩ মাস থেকে মানুষীক সমস্যায় ভুগতে ভুগতে আজ আমি ক্লান্ত। অনেক চেষ্টা করেছি সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কিন্তুু পারি নি।। হয়তো শুধু এই সময়টায় একজন মানুষের দরকার ছিলো যে টেনে তুলবে এই সমস্যা থেকে কিন্তুু কাউকে পাই নি।। না পরিবারের কাউকে পেয়েছি না বন্ধুদের না যাকে ভালোবাসতাম তাকে পেয়েছি কাউকে না। কিন্তুু কষ্টটা সেখানেই সবাই দেখেছে আমি দিন দিন কেমন হয়ে যাচ্ছি কিন্তুু কেউ পাশে থেকে বলে নি যে চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে। বিশেষ করে সেই মানুষটা যে বলার সবচাইতে বেশি দরকার ছিলো সেও কখনো বলে নি কিন্তুু সবার থেকে বেশি সেই জানতো। সবার চোখের সামনে দিয়েই আমার জীবনটা শেষ হয়ে যাচ্ছিলো কেউ পাশে এসে দাড়ায় নি। ডিপ্রেশন মানুষকে শেষ করে দেয় কথাটা শুনেই আসছি এতো দিন কিন্তুু এখন নিজেকেই দেখছি। মাইগ্রেন এর সমস্যা যাদের আছে তাদেরকে কষ্ট কি জিনিষ শিখাতে হয় না,তাদের কষ্টের দ্বারাই তাদের নিজকে শেষ হতে হয়!

কি করা উচিৎ এই লাইফের? আমি যে আর পারছি না। সিধান্ত!

সবাইকে ছেড়ে যেতে অনেক কষ্ট হবে কিন্তুু এই সব চাপ নিয়েও থাকতে পারছি না আর। পরিবারের বাবা মা,বোন,বাগিনা-বাগনী,প্রিয় মানুষ,বন্ধুদের সবাইকে ছেড়ে থাকাটাও কষ্টের হবে কিন্তুু সেই কষ্টটা এদুনিয়াতে আর দেখতে হবে না। যাই হোক সবাই ভালো থাকুক এটাই চাই। বিশেষ করে তারা যারা ভালো থাকার জন্য আমায় ভালো থাকতে দেয় নি তারা সবাই ভালো থাকুক।

আর কোন দিন না খেয়ে থাকলে মা তোমার বকতে হবে না। সরারাত বাহিরে বাহিরে থাকলে তোমার টেনশন করতে হবে না। রাতে না ঘুমালেও তোমার বকতে হবে না। মাকে টাকার জন্য বিরক্ত করবো না।। বাবার আর কোন চিন্তা থাকবে না ভবিষ্যৎতে কি করবো না করবো নিয়ে। মাকে আর আমার জন্য বাবার বকা শুনতে হবে না। জীবনে সবচাইতে বড় উপহার পেয়েছিলাম আমার ৩ বোনকে। তাদের মতো বোন পাওয়াটা আসলেই ভাগ্যের ব্যাপার। কোন দিন আর বোনরা আসলে তাদের ভবিষ্যৎ ভাবি কেমন হবে তা নিয়ে মজা করা হবে না,কোন দিন বলা হবে না তোরাই তো আমাদের বাড়িতে এসে এসে আমাদের সব খাবার খেয়ে চলে যাস, কোন দিন আর হাসি ঠাট্টা হবে না তাদের সাথে।। বড় আপুর কাছে আর কোন দিন ভাই টাকা চাইবে না। মেঝো আপুর সাথে আর কথা হবে না। চোট বোনের বাড়িতে যাওয়া হবে না ফোন করে খবর নেয়া হবে না। কোন বোন আর বলবে না আসফাকে বেশি আদর করি। তামিকে আর কোন মারবো না। তাসিন আবিরকে আর কোলে নিবো না। রাইসার সুন্দর সুন্দর ফটো আর ফেসবুকে ছাড়া হবে না। কাকারা মামারা ফুফুরা আর কেউ কোন দিন বলতে হবে না বয়স অনেক হইছে কোন কাজ কি আর করবি না। দাদিকে আর কোন দিন বকা দিবো না। মামার কাছে আর ফোন চাইবো না।। আর কেউ কোন দিন ক্রিকেট খেলতে ডাকবে না, ফুটবল খেলার জন্য কেউ ডাকবে না।। পাড়ায় বসে টাস খেলা হবে না।। বড় ভাই বন্ধুদের সাথে বসে আর আড্ডা দেওয়া হবে না। রাত জেগে ফুটবল খেলা দেখা হবে না। খেলা নিয়ে কারো সাথে তর্কাতর্কি হবে না।। সবই এক নিমিষে শেষ হয়ে যাবে।

সব মিলিয়ে সবাই একদিন ভুলেই যাবে

প্রশ্ন শুধু একটাই কেউ কি কোন দিন আমার নিরবতা একাকীত্ব দেখে নি? হয়তো আমার রাতের অজস্র কান্না কেউ দেখেনি। কিন্তুু আমার ডিপ্রেশন সবাই দেখেছে কেউ কিচ্ছু করে নি পরিবারের কেউও না এমনি যাকে সবার চাইতে আলাদা করে দেখতাম সেও দেখেও দেখে নি। যাক এটাই ছিলো আমার ভাগ্যে লিখা।

সবাই পারলে ক্ষমা করে দিয়েন। জীবনে অনেকের মনে অনেক ভাবে কষ্ট দিয়েছি সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি হয়তো আর কোন দিন ক্ষমা চাইতে পারবো না এটাই শেষ চান্স।

I’m tired
I’m Broken
I’m falling Apart
I’m tired of trying
I’m tired to fake Smile
I’m Dying
I’m Cutting
I’m getting worse
and You have no idea Depression,loneliness,pain,hopeless, empty, Alone,Broken,worthless, ugly, Pathe

এছাড়াও চেক করুন

রাজনৈতিক মামলায় পলাতক সৈয়দ মো: ওবায়েদ উল্যাহ

ফেনী সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের দক্ষিন খাসেবাড়ী মোস্তাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ মো: ওবায়েদ উল্যাহ পিতার- …

২ মন্তব্য

  1. Pingback: ais fiber

  2. Pingback: รับจด อย