প্রচ্ছদ / প্রচ্ছদ / যৌতুক একটি মেয়েকে নয়,একটি পরিবারকে শেষ করে দেয়

যৌতুক একটি মেয়েকে নয়,একটি পরিবারকে শেষ করে দেয়

গাজী ফরহাদ , সৌদি আরব :
যৌতুকের জন্য যে নাদিয়া কে গতকাল হত্যা করা হয় সে নাদিয়া বাবা-মায়ের আদরের কন্যা ছিলো । নাদিয়ার সকল আশা পূরণ করতে না পারলেও পূরণ করার চেষ্টা করেছে বাবা-মা ।

নাদিয়ার বাবা যখন তার বন্ধুর ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করে নাদিয়া তখন চুপটি মেরে ঘরে ডুকে রুমের দরজা বন্ধ করে কয়েক ঘন্টা বসে ছিলো, নাদিয়ার বাবা – মা বিষয়টি বুঝতে পেরে সাথে সাথে বিবাহ দিবে না বলে তার বন্ধু কে সোজা জানিয়ে দিয়েছিলো।

এরপর নাদিয়া দরজা খুলে তার বাবা কে জড়িয়ে ধরে তার ভালোবাসার মানুষের কথা বলে দেয় , বাবা ও আপত্তি করেনি যেহেতু তার আদরের কন্যার পছন্দ । সুন্দর ভাবে বিবাহ সম্পূর্ণ হলো নাদিয়া এবং তার ভালোবাসার মানুষের সাথে।

বিবাহে কোনো শর্ত কিংবা কোনো দাবিও ছিলো না, যদি ছেলে পক্ষের দাবি থাকতো তাহলে নাদিয়ার বাবা দিতে প্রস্তুত ছিলেন, তবে নাদিয়া মেয়েটা এই কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ।

দিন যায় মাস যায় নাদিয়া বাপের বাড়ি আসতে পারেনা, সারাদিন তার বাবা – মা যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও নাদিয়ার কোনো খোঁজ পাওয়া যায় না। নাদিয়ার বাবা – মা নাদিয়া কে পরেরদিন দেখে আসার চিন্তা ভাবনা করলো।

রাতে হাসি-খুশি ভাবে ঘুমিয়ে পড়লো নাদিয়ার বাবা-মা কারণ আগামীকাল তারা তাদের আদরের কন্যা কে দেখতে যাবে, বহুদিন তাদের আদরের কন্যা কে দেখেনা।

ভোর বেলায় নাদিয়ার শ্বশুর বাড়ির পাশের ঘরের একজন প্রতিবেশী নাদিয়ার বাবার নাম্বার সংগ্রহ করে কল দেন, কল দিয়ে নাদিয়ার বাবা কে নাদিয়ার মৃত্যুর খবর শুনালে নাদিয়ার বাবা যেনো আকাশ থেকে পড়েন ।

নাদিয়ার বাবা- মা ছুটে চললো নাদিয়ার শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ্য , নাদিয়ার শ্বশুর বাড়িতে এসে দেখে নাদিয়ার লাশ পড়ে আছে দরজার সামনে । বাবা-মায়ের আদরের কন্যা কে এইভাবে দেখবে তা কখনো কল্পনা করতে পারেনি !

কয়েক ঘন্টা পর পুলিশ এসে লাশ সনাক্ত করে নিয়ে যায় পোস্টমর্টেম করাতে, তারপর পোস্টমর্টেম রিপোর্টে নাদিয়ার শরীরে বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়, এত অত্যাচার সহ্য করে কীভাবে মেয়েটা শ্বশুর বাড়িতে ছিলো তা দেখে ডাক্তার নিজেও অবাক হয়ে যায় !

নাদিয়ার বাবা-মা মামলা করার আগে মামলার করে দেন পোস্টমর্টেম করা ডাক্তার , কারণ ডাক্তার নিজেও বুঝতে পেরেছিলো এটা যৌতুক এর বিষয় নিয়ে এই হত্যা হয়। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো ডাক্তার মামলা করার একমাত্র কারণ মেয়েটা এত কষ্ট সহ্য করেও সে যৌতুকের বিরোধিতা করেছিলো।

অবশেষে নাদিয়া কে কবরে রেখে কবরের পাশে কান্না করতে করতে মৃত্যু বরণ করেন নাদিয়ার বাবাও।

নাদিয়ার বাবা’র মৃত্যুর খবর শুনে সাথে সাথে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন নাদিয়ার মা। এই দিকে মাটি দিতে যাওয়া মুসল্লীরা নাদিয়ার বাবার লাশ বাড়িতে নিয়ে আসেন, নাদিয়ার মা কে দেখার জন্য হসপিটাল থেকে ডাক্তার ছুটে আসেন । ডাক্তার এসে নাদিয়ার মাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নাদিয়ার বাবা – মা নাদিয়াকে কত ভালোবাসতো তা সত্যি উল্লেখ করা সম্ভব নয় । যৌতুক শুধু একজন মেয়ে কে নয় , একটি পরিবার কে শেষ করে দেয়।

আসুন আমরা যৌতুক কে না বলি,

যৌতুক দেওয়া এবং নেওয়া সমান অপরাধ । অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে আমরা দূরে থাকি, প্রয়োজনে প্রশাসন কে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করি।

এছাড়াও চেক করুন

রাজনৈতিক মামলায় পলাতক সৈয়দ মো: ওবায়েদ উল্যাহ

ফেনী সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের দক্ষিন খাসেবাড়ী মোস্তাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ মো: ওবায়েদ উল্যাহ পিতার- …

৬ মন্তব্য