সুশান্ত কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা,বান্দরবান প্রতিনিধিঃ
বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তিন ইউনিয়ন,নাইক্ষ্যংছড়ি সদর, সোনাইছড়ি,ঘুমধুম আগামী ১৪ অক্টোবর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন ঘিরে উপজেলার তিন ইউনিয়নে ভোটারদের মাঝে দেখা যাচ্ছে উৎসাহ উদ্দীপনা। ভোট নিয়ে চায়ের দোকান গুলোতে চলছে আলোচনা,এবার কে হচ্ছেন পাঁচ বছর মেয়াদের চেয়ারম্যান, প্রচার-প্রচারণায় মুখর প্রত্যন্ত পাহাড়ী-বাঙ্গালী গ্রামগুলোতে গণসংযোগ, মাইকিং,উঠান বৈঠক ভোট চাইতে প্রার্থীরা ছুুটছেন এই পাড়া থেকে অন্য পাড়ায়। পাহাড়ী-বাঙ্গালী ভোটারদের দ্বারেদ্বারে গিয়ে কাছে টানতে চাইছেন প্রার্থী’রা।
সদর ইউনিয়নে: সরকার দলীয় প্রার্থী তসলিম ইকবাল চৌধুরী নৌকা প্রতীক নিয়ে শতভাগ আশাবাদী হলেও মাঠে সমান তালে দাবড়ে বেড়াচ্ছেন আনারস প্রতীক নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী আবছার উদ্দীন ইমন। জামায়াত-বিএনপির প্রার্থী না থাকায়, দুই প্রার্থীর মাঝেই উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে জামায়াত-বিএনপির নিরবতা। কার পক্ষে যাবে এই দুইদলের রায় এমন প্রশ্ন জনমনে। এদিকে, মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার পর যাচাই-বাচাই ও প্রত্যাহার পর্ব শেষে চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত মহিলা আসনের এবং সাধারণ সদস্য পদে প্রার্থী মাঠে নেমেছে বিজয়ের লড়াইয়ে।
এদিকে গত ২৩ সেপ্টেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে পোষ্টার ব্যানার আর ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো নির্বাচনী এলাকা। জয়ের লক্ষ্যে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন প্রার্থীরা। প্রতিদ্বন্দ্বীতার মাঠে জনগণের সমর্থন আদায়ে প্রার্থীর পক্ষে দলীয় নেতাকর্মীরা দিন-রাত চষে বেড়াচ্ছেন মাঠঘাট। অনেকেই প্রচার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে মাঠে ময়দানে এখন বইছে নির্বাচনী আমেজ। আর ভোটাররাও উপভোগ করছেন প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা।নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন : নৌকা নিয়ে নির্বাচনী মাঠে প্রচারণায় তুঙ্গে সরকারী দলীয় প্রার্থী নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি ও বর্তমান ইউ.পি চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী। ইতিমধ্যে রাজনীতির মাঠে বিচক্ষণ ও জনবান্ধব জনপ্রতিনিধি হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেছেন তিনি।
জয়ের বিষয়ে শত ভাগ আশাবাদী তসলিম ইকবাল চৌধুরী জানান, উপ-নির্বাচনে নৌকার প্রতীকে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে গত দুই বছর আমি চেয়ারম্যান হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব পালন করেছি। এখানে জাতি , ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে আমরা একই মায়ের অভিন্ন সন্তান,সকলে মিলে মিশে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নে উন্নয়নে কাজ করেছি। একজন পরীক্ষিত ব্যক্তি হিসেবে আমি আশা করছি নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নবাসী তা মূল্যায়ন করবেন এবং নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে তার প্রমাণ দিবেন।
তথ্যসূত্রের মতে, আ,লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মাঠে সমান তালে আছেন আবছার উদ্দীন। এ বিদ্রোহী প্রার্থী আবছার নির্বাচনের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন,বিতর থেকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ একাংশ। বিএনপি-জামায়াত কোন প্রার্থী না থাকায় প্রার্থীরা ভোটাদের দ্বারেদ্বারে ঘুরছেন কিন্ত নেতা-কর্মীরা ধরা দিচ্ছেনা কোন প্রার্থীকে। নিরব ভোটের মাঠে মূখ খুলছেনা কেউ। কোন প্রার্থীর সাথে ভোটের মাঠেও দেখা যাচ্ছে না। কেন্দ্রে ভোট দিতে যাচ্ছেন কিনা এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে আলোচনা। হিসাব-নিকাশে মিলাতে পারছেনা এবারে কে হবে সদরের চেয়ারম্যান।
সোনাইছড়ি ইউনিয়ন: সোনাইছড়ি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন ইউনিয়ন আ,লীগ সাধারণ সম্পাদক এ্যনিং মার্মা তার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে লড়ছেন ইউনিয়ন আ,লীগ সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান (বিদ্রোহী) বাহান মার্মা (আনারস) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। এ ইউনিয়নে প্রচার-প্রচারণা চলছে সমান তালে। তবে উপজেলার মধ্যে সোনাইছড়ি ইউনিয়নটি আওয়ামীলীগে ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর সাথে প্রচার-প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে সাধারণ ভোটারদের। তবে নৌকার প্রার্থী এ্যনিং মার্মা বিরোদ্ধে আছে অভিযোগ। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ইউএনডিপির শিক্ষা প্রকল্পে শিক্ষক নিয়োগ দেখিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ। তবে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী’রা জানান তাঁর প্রচেষ্ঠায় এলাকায় সরকারিভাবে উন্নয়নে সহযোগিতা এবং দুঃখে- সুখে, মানুষের পাশে থেকে মানুষের সেবা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ভোটারদের আলোচনায় উঠে আসছে এ্যনিং মার্মা নাম। সর্বোপরি আওয়ামী লীগ ঘাঁটি হিসেবে ঐতিহ্য ধরে রাখতে চাই আওয়ামী লীগ। ভোটার’রা এবারও নৌকার প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন বলে আশাবাদী।
ঘুমধুম ইউনিয়ন: নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা, একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ,স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে (ঘোড়া) প্রতীক নিয়ে সাবেক মেম্বার রশিদ আহাম্মদ ও (আনারস) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা ছালেহ আহাম্মেদ প্রকাশ ছালেহ উদ্দীন। ত্রি-মূখী লড়াইয়ে হবে এই ইউনিয়নে। জয়ের লক্ষ্যে দিনরাত প্রচার -প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছে প্রার্থীরা।
একাধিক ভোটারেরা জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে একমাত্র ঘুমধূম ইউনিয়নে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মাঠে লড়াইয়ে আছেন সাবেক ইউ,পি মেম্বার মো: রশিদ আহাম্মদ ও মাওলানা ছালেহ আহাম্মেদ। গত ইউপি নির্বাচনে ৫ প্রার্থী হওয়ায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতায় অল্প ভোটে বিজয়ী হতে পারেনি রশিদ আহাম্মদ।
রশিদ আহাম্মদের বিষয়ে সাধারণ ভোটার’রা জানান, সাবেক ইউ,পি সদস্য হিসেবে সুখ- দুঃখে জনগণের সেবক হিসেবে থেকে কাজ করেছেন রশিদ আহাম্মদ। ভোটাররা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য দেখে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করলে ইনশাআল্লাহ ঘোড়া মার্কা বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে বলে শতভাগ আশাবাদী প্রার্থীর কর্মীরা।
CNNEWS24.COM সত্যের সন্ধানে সবার সাথে মিলে মিশে

৪ মন্তব্য
Pingback: lefkosa escort
Pingback: clothing manufacturer
Pingback: โรงแรมในเมืองเพชรบูรณ์
Pingback: กราฟีน