জবি প্রতিনিধি:
করোনার কারণে মার্চ মাস থেকে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু করোনা বিস্তার কম না হওয়ায় এখনও পর্যন্ত খোলা সম্ভব হয়নি দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। তাই শিক্ষা ব্যবস্থার এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অনলাইনে ক্লাস শুরু করতে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন অসুবিধার জন্য অনলাইন ক্লাসে দ্বিমত অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের।
করোনায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ভিতর অনলাইনে ক্লাস করেছে জবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের শিক্ষার্থীরা (বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩ ব্যাচ)। জানা যায়, ৩১ মার্চ ফেসবুক গ্রুপে লাইভের মাধ্যমে ‘অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া ও প্রতিষ্ঠানসমুহ (এমসিজে- ৩১০২)’ কোর্সের ক্লাস নেন বিভাগের প্রভাষক মো. রুমান শিকদার। তবে সব শিক্ষার্থীর এলাকায় ভালো নেটওয়ার্ক না থাকা, সবার ডাটা কেনার সামর্থ না থাকা ও ক্লাস করার উপযোগী ডিভাইস না থাকায় ৮০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ ৭-৮ জনের বেশি কেউ ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারে নি। তাই অনলাইনে এ ক্লাস দ্বিতীয় দিনের মুখ দেখে নি বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
অনলাইনে ক্লাস করার অভিজ্ঞতা, ক্লাস দ্বিতীয় দিনের মুখ না দেখার কারণ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইলে সাংবাদিকতা বিভাগের ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাবিউল হাসান বলেন, অনলাইন ক্লাসের সাথে আমরা একেবারেই অভ্যস্ত নই। সেক্ষেত্রে এটার সাথে মানিয়ে নেওয়াটা খুব একটা সহজ কাজ নয়। যখন অনলাইনে ক্লাস করি তখন বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তার মধ্যে অন্যতম ছিল অনেক শিক্ষার্থীদের বাসা প্রত্যন্ত অঞ্চলে হওয়ায় নেটওয়ার্কের সমস্যা। যার কারণে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই অংশগ্রহণ করতে পারেনি। এবং ক্লাস চলাকালীন সময়ে বারবার কানেকশনও চলে গিয়েছিল। এছাড়াও অনলাইন ক্লাস করতে হলে যে ভাল ইকুইপমেন্ট কিংবা সেটাপের প্রয়োজন, সেটিও আমাদের নেই। ঢাকায় বাসা হওয়া সত্ত্বেও আমিও টেকনিক্যাল সমস্যায় পড়েছিলাম, তাই ২য় ক্লাস করতে আগ্রহী ছিলাম না।
নাবিউল আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এতে খুব একটা সুফল হবেনা। আমার নিজেরই চলমান সেমিস্টারে ‘ফিল্ম এপ্রিশিয়েশন এন্ড ক্রিটিসজম’ নামক কোর্স রয়েছে যেখানে আমাদের তাত্ত্বিক আলোচনার পাশাপাশি ক্লাসে প্রোজেক্টরে কিছু সিনেমাও দেখানো হয়, যেটা এখন আর সম্ভব নয়। আবার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করলেও তো ল্যাব করা আর সম্ভব হবেনা। সে ক্ষেত্রে এভাবে ক্লাস চালিয়ে নেওয়া খুব একটা সুফল হবে বলে আমি মনে করিনা।
একই ক্লাসের শিক্ষার্থী নোমান বিল্লাহ বলেন, ইতোমধ্যে আমরা অনলাইনে ক্লাস করেছিলাম। ক্লাস যেমনই হোক না কেন অনেকদিন পর যে ক্লাস করেছিলাম তা ভালো লেগেছিলো। তবে প্রযুক্তিগত সমস্যায় ক্লাস দ্বিতীয়বার হয়নি। কারণ নেটওয়ার্কের সমস্যায় স্যারের লাইভ বারবার কেটে যাচ্ছিল ও সাউন্ড ঠিকমতো শুনা যাচ্ছিল না। অন্যদিকে ভালো নেটওয়ার্ক না পাওয়ায় একসাথে ৭-৮ জনের বেশি কেউ ক্লাস করতে পারে নি।
নোমান আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে ভার্চুয়াল ক্লাসের কথা বলছে এতে সবাই সুফল পাবে না যতটা বাস্তবে পেয়েছে। এছাড়া শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে অনেকেই প্রযুক্তিগত সামর্থ ও ব্যবহার বিধি জানা না থাকায় এটা আশানুরূপ সুফল বয়ে আনবে না। আবার অধিকাংশ শিক্ষার্থীর ডাটা কেনার সামর্থ না থাকায়, ক্লাস করার উপযোগী ডিভাইস না থাকায় এ সমস্যায় বেশি পড়বে।
শিক্ষার্থী কেয়া সরকার বলেন, বন্ধের পর ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে রুমান শিকদার স্যারের ১ ঘন্টার ক্লাস করার অভিজ্ঞতা হয়েছিল আমাদের। তবে আমরা অনলাইনে ক্লাস করতে গিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। প্রথমত নেটওয়ার্কের সমস্যা। বারবার ভিডিও আটকে যাচ্ছিল। অনেকেই ক্লাসে অংশগ্রহন করতে পারে নি।
কেয়া আরও জানান, আমিও নেটওর্য়াকের কারনে খুব সমস্যায় পড়েছিলাম। মাঝেমধ্যেই কানেকশনের অভাবে লেকচার ঠিকমত শুনতে পারছিলাম না, তাই ঠিকমত লেকচার বুঝতে পারিনি। আবার স্যার সব প্রশ্ন কমেন্ট থেকে পড়ে উত্তর ও দিতে পারেনি কারন অনেক প্রশ্ন ছিলো। তা স্বত্তেও আমি ক্লাস করতে আগ্রহী ছিলাম কিন্তু নানা জটিলতার কারনে তা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
আরেক শিক্ষার্থী উম্মে রুমানা লিমা বলেন, অনলাইন ক্লাসটি আমরা একদিনই করতে সক্ষম হয়েছিলাম। নানা রকম সমস্যার কারণে এটা আর সামনের দিকে এগোয় নি। যেমন- বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের গ্রামের বাড়ি প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে রয়েছে নেটওয়ার্ক সমস্যা। আবার সব জায়গায় তখন কড়াকড়ি লকডাউন চলছিলো যার কারণে দোকানগুলো বন্ধ থাকার দরুন এমবি কেনা সবার পক্ষে একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। অন
CNNEWS24.COM সত্যের সন্ধানে সবার সাথে মিলে মিশে